
নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ: অবশেষে প্রশাসনের চাপের মুখে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গা পুজার বিজয়া দশমিতে প্রতিমা বিসর্জন দিয়েছেন লক্ষী নারায়ণ কটন মিলস সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের ভক্তবৃন্দরা। একটি চক্র এবারের পূজোয় তাদের প্রতিমা বিসর্জন না দিয়ে এলাকাবাসীর সাথে বড় ধরনের সংঘর্ষের ছক এঁকেছিলো গুটি কয়েক হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের নিয়ে এমনই কথা ভেসে বেড়াচ্ছে ওই এলাকায়।
তবে সচেতন মহল ও প্রশাসনের চাপের মুখে সটকে পড়তে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সঠিক সময়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের শক্তিশালী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন লক্ষী নারায়ণ কটন মিলস সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের ভক্তবৃন্দ ও নীট কনসার্ন গ্রুপ পরিবার, নিউ লক্ষী নারায়ণ মিল কর্তৃপক্ষ, চৌধুরীবাড়িসহ আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার শিখনের নেতৃত্বে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই এলাকার গুটি কয়েক ব্যক্তি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে ওই মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জন না দিতে ফন্দি ফিকির করেছিলো। তারা চেয়েছিলো বিশৃংখলা করে একটি পক্ষকে চাপের মুখে ফেলে তাদের স্বার্থ হাসিল করতে। তবে প্রশাসন, মিডিয়া, সচেতন নাগরিক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সতর্ক অবস্থানে থাকায় তাদের নীল নকশা ভেস্তে গেছে। ফলে হিন্দু সম্প্রদায়ের সাধারন মানুষসহ সকলেই মুক্তি পেয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ঘুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার শিখন তাদের সম্প্রদায়ের মানুষকে জিম্মি করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেন সবসময়। ধর্মের দোহাই দিয়ে মোটা অংকের উৎকোচ নিতে বিভিন্ন সময় নানা ফন্দি ফিকির করেন তিনি। এমনই এক নীল নকশা এঁকেছিলেন এবারের দূর্গা পুজোয়। যা বাস্তবায়ন হতে দেয়নি জেলা পুলিশ।
হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকজন জানান, নীট কনসার্ন গ্রুপের মালিকের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নিতেই এবারের গল্প সাজাতে চেয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার শিখন। তার পাতানো ফাঁদে পানি ঢেলে দিয়েছেন প্রশাসন।
মনি রানী নামে এক বাসিন্দা জানান, লক্ষীনারায়ণ মিল থেকে প্রতিমা বিসর্জন না দিতে বিজয়া দশমির দিনের দুপুর থেকেই ওই মন্ডপের লোকদের চাপ প্রয়োগ করেন তিনি। তবে বিষয়টি প্রশাসন ও মিল কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের বিষয়টি বুঝিয়ে বললে তারা তাদের প্রতিমা বিসর্জণ দেওয়ার কথা জানান। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার ঝড়ের আভাসের কথা বললেও শিপন সরকার শিপনের নানা তালবাহানার কারণে রাত নটার প্রতিমা বিসর্জন দেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হিন্দু সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি জানান, শিখন সরকার শিপনের এক সময় কিছুই ছিলনা। নিজেকে আওয়ামীলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে মানুষকে বিভিন্ন কৌশলে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ফন্দি ফিকিরে থাকেন তিনি।
এ বিষয়ে শিখন সরকার শিপনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেন নি। তবে বকুল বিশ্বাস নামে লক্ষী নারায়ণ কটন মিলস সার্বজনিন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বলেন, এ বছর আমরা প্রতিমা বিসর্জন দিবো না। আমাদের নেতা শিপন সরকার শিখন আমাদের বলেছেন। পরে প্রশাসনের চাপে মুখে প্রতিমা বিসর্জন দিতে রাজী হন বকুল বিশ্বাসসহ সংশ্লিষ্টরা।
নারায়ণঞ্জ জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, বিজয়া দশমিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সনতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের ইতি টানবেন। লক্ষী নারায়ণ কটন মিলস সার্বজনিন পূজা উদযাপন কমিটির সকলের সাথে কথা হয়েছে তারা নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে এবারের পূজোর ইতি টানবেন বলে আমাকে কথা দিয়েছেন। ঘটনাস্থালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসিসহ আমাদের টিম রয়েছে। আশা করছি কোন ধরনের বিশৃংখলা হবে না।