
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার নয়াপুর বাজার এলাকায় সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসানাতের নাম ভাঙ্গিয়ে রেলওয়ের জমি দখল করে অবৈধ রেষ্টুরেন্ট ও সোমেইল নির্মাণ করে ব্যবসা পরিচালনা করছেন এক ইউনিয়ণ যুবলীগ নেতা। সরকারি জমি কোন প্রকার লীজ বা ইজারা না নিয়ে বছরের পর বছর ধরে ব্যবসা পরিচালনা করে আসলেও যেন দেখার কেউ নেই। এদিকে অবৈধ জমিতে ব্যবসা করে ইতিমধ্যেই যুবলীগ নেতা অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। অভিযুক্ত ওই যুবলীগ নেতার নাম দেলোয়ার হোসেন।তিনি সোনারগাঁ উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি।
সরেজমিনে নয়াপুর এলাকায় গিয়ে দেখাগেছে, রেলের জমি দখল করে প্রায় দুই বিঘা জমির উপর আলিফ ফাষ্টফুড এন্ড রেষ্টুরেন্ট ও সোমেইল নির্মাণ করে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। প্রতিমাসে সরকারি জমি থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন।
তিনি সোনারগাঁ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসানাতের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, জমির ব্যবসাসহ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। চাউর রয়েছে, যুবলীগের সভাপতির পদটিও তিনি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে হাতিয়ে নিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাদিপুর ইউনিয়নের এক বাসিন্দা জানান, এক সময় যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেনের কিছুই ছিলনা। সময়ের পরিবর্তনে আজ তিনি অঢেল টাকার মালিক। যুবলীগ করে রেলওয়ের জমি দখল করে রেষ্টুরেন্ট ও সোমেইল নির্মাণ করেছেন। এছাড়াও ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও জমির ব্যবসাও করে রাতারাতি তিনি প্রচুর সম্পত্তির মালিক বনে গেছেন।ৎ
আফজাল হোসেন নামে সাদিপুর গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন সরকারি জমি দখল করে রেষ্টুরেন্ট ও সোমেইল বানিয়ে রাতারাতি বহু পয়সার মালিক বনে গেছেন। এক সময়ের সাধারণ দেলোয়ার হোসেন এখন অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাদিপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, রেলওয়ের জায়গা খালি পড়ে থাকায় আমি রেষ্টুরেন্ট ও সোমেইল বানিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছি। তবে সরকারের প্রয়োজন হলে জমি ছেড়ে দিবো। সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসানাতের নাম ভাঙ্গিয়ে ঝুট ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালাচ্ছেন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই অভিযোগটি সম্পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনের সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসানাত বলেন, আমার নাম ব্যবহার করে কেউ কোন অন্যায় করলে তাকে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না। কোন অপরাধী আমার পরিচিত হতে পারে না।
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুইয়া নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজকে জানান, দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ সরকারি জমি দখল করলে তার দায়ভার তাকে নিতে হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের এসেট কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম জানান, রেলের জমি দখল করে কেউ যদি অভৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হবে। খুব শিঘ্রই জমি উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।