
নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটিতে স্বজনপ্রীতি ও অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ করেছেন পদবঞ্চিতরা। তারা কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ মে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার এবং সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুম স্বাক্ষরিত ৭১ সদস্যের প্রস্তাবিত কমিটি অনুমোদনের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবিত এ কমিটিতে ২২ জনই নতুন মুখ। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কোনো পদ-পদবিতে তারা কখনও ছিলেন না বলে অভিযোগ।
এ ছাড়া কমিটিতে আব্দুল্লাহ আল কায়সারের পরিবার ও নিকটাত্মীয় মিলিয়ে ৮ জনকে রাখা হয়েছে। তারা হলেন ছোট ভাই সানজিত হাসনাত, তিন চাচা মনির হোসেন, আরিফ মাসুদ বাবু, মোস্তফা কামাল নিলু, নিকটাত্মীয় আশরাফুজ্জামান, রফিকুল হায়দার বাবু, আবুল মতিন দুলাল। এদের মধ্যে আবুল মতিন দুলাল ফরিদপুরের বাসিন্দা, আরিফ মাসুদ বাবু গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে মোগড়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হয়েছেন। এ ছাড়া শামসুল ইসলাম ভূঁইয়ার ছেলে মারুফ ইসলাম ঝলককে রাখা হয়েছে কমিটিতে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক প্রবীণ নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কমিটিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাউকে রাখা হয়নি। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ না করলেও আব্দুল্লাহ আল কায়সারের ছোট ভাই সানজিত হাসনাত ও শামসুল ইসলাম ভূঁইয়ার ছেলে মারুফ ইসলাম ঝলককে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
শম্ভুপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক মোল্লা বলেন, প্রস্তাবিত এ কমিটিতে স্বজনপ্রীতি ও অর্থ বাণিজ্য হয়েছে। ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। জীবনে কোনো দিন দল না করে শুধু অর্থের বিনিময়ে শিল্পপতি ফারুক হোসেন ভূঁইয়াকে কোষাধাক্ষ করা হয়েছে। দলের হাইকমান্ডকে বিষয়টি লিখিতভাবে অবগত করব। প্রস্তাবিত কমিটি বাতিলের দাবিতে তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে আন্দোলনের কথাও বলেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘নবীন-প্রবীণদের সমন্বয়ে কমিটি করা হয়েছে। শিল্পপতি ফারুক ভূঁইয়া ও আমার ছেলের নাম হাইকমান্ডের নির্দেশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে কাউকে কমিটিতে রাখা হয়নি।
সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার বলেন, “সভাপতি শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া নামগুলো নির্বাচন করে প্রস্তাব করেছেন। এতে হয়তো আমার আত্মীয়-স্বজনের সংখ্যা বেশি হতে পারে। তবে তাদের নিজস্ব যোগ্যতায় পদ পেয়েছেন।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ফরিদপুরের আব্দুল মতিন দুলাল আগের কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি সোনারগাঁয়ের ভোটার।
জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যের প্রস্তাবিত কমিটি পেয়েছি। চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে অবশ্যই খোঁজখবর নেওয়া হবে। বিতর্কিত কেও কমিটিতে থাকতে পারবে না।
১৯৯৭ সালে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়েছিল। দীর্ঘ ২৫ বছর পর গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর সম্মেলনে শুধু সভাপতি, সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষনা করা হয়।