
নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ
রূপগঞ্জের ভুলতার শাওঘাট এলাকায় অবস্থিত আরআইসিএল (রহিম ইন্ডাস্ট্রিয়াল লিমিটেড) স্টিল মিলের বাট্টিতে লোহা গলানোর সময় বিস্ফোরণের ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল হক মিলটি পরিদর্শন করেছেন। এসময় প্রশাসন ওই কারখানার গ্যাস এবং বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেন। এছাড়া ঘটনা তদন্তের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।
ইউনও ফয়সাল আলম বলেন, মিল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছি। ঘটনার তিন ঘন্টা পার হয়ে গেলেও ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসকে অবহিত করেননি মিল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগ পর্যন্ত এবং সরকারি সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত গ্যাস এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকবে।
এর আগে গত গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই রি-রোলিং মিলের ভেতরে এ দূর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই নিয়ন নামে এক শ্রমিক মারা যান। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও তিনজনের মৃত্যু হয়। নিহত চার শ্রমিক হলেন- শংকর (৪০), মো. ইলিয়াস আলী (৩৫), নিয়ন (২০) ও আলমগীর (৩৩)। বর্তমানে রাব্বি, জুয়েল ও ইয়াছিন নামের আরও তিনজন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
এদিকে নাম না প্রকাশের শর্তে কয়েকজন শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, গত ৩ মাস ধরে কারখানাটি চালু করা হয়েছে। কারখানাটিতে প্রাথমিকভাবে ২০-২৫ জন শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কারখানাটি গত ৩ মাস ধরে চালু হলেও কারখানার ভেতরে কোন প্রকার অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থার সামগ্রী রাখা হয়নি। এছাড়া এ ধরনের ঝুকিপূর্ণ কাজ করার জন্য শ্রমিকদের দেওয়া হয়নি কোন প্রকার সুরক্ষা সামগ্রী। এতে করে এতোদিন পর্যন্ত শ্রমিকরা ঝুকি নিয়ে কারখানাটিতে কাজ করে যাচ্ছিল।
এদিকে শ্রমিকরা কারখানা মালিক পক্ষকে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা ও ঝুকিপূর্ণ কাজের সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করার কথা বলে আসছিল। কিন্তু মালিকপক্ষ তাদের কোন প্রকার কর্নপাত না ঝুকিপূর্ণভাবে শ্রমিকদের কাজ করিয়ে যাচ্ছিল। এতে শ্রমিকরা মালিকপক্ষের প্রতি কিছু নাখোশ থাকলেও পেটের দায়ে শ্রমিক বাধ্য হয়ে কাজ করতো।