
নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকারি চাকরি মানেই বদলি, বাংলাদেশ সরকার এর বিধান অনুযায়ী একই কর্মচারী একই কর্মস্থানে সরকারি চাকরীজীবী হিসেবে ৩ বছরের বেশি থাকতে পারে না। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় মনিরুল ইসলাম মনির ও মো. আরিফুল ইসলাম নামে দুই কর্মকর্তা প্রায় ১৪ বছর ধরে স্বপদে চাকুরী করে যাচ্ছেন। একের পর এক ইউএনও বদল হলেও স্বপদে অদৃশ্য ঈশারায় বহাল এই দুই ব্যক্তি। মনিরুল ইসলাম পূর্বে সাঁট-মুদ্রাক্ষরিক কম্পিটার অপারেট (৩য় শ্রেণি) হিসেবে দায়িত্বে থাকলেও বর্তমানে সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে মো. আরিফুল ইসলাম হিসাব সহকারী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে।
মনিরুল ইসলাম মনিরের নামে অভিযোগ এর শেষ নেই। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা কার্যালয়ে মনিরুল ইসলাম মনির অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন এবং সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সাথে আঁতাত করে বিভিন্ন রকমের সুবিধা নিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কি মধু আছে নারায়ণগঞ্জ সদর উপলোয়? যার কারণে মনির কোথাও বদলি হতে রাজি নন! মনির এখানে অনেক দিন থাকায় তার আগুল ফুলে কলা গাছ হয়ে গেছে বলে অনেকে জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদর উপজেলার এক কর্মকর্তা জানান, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ উপজেলা অফিসে থেকে মানুষের ক্ষতি করে যাচ্ছে। অর্থ দিয়ে তাদের বদলি বাতিল করে রাখে। বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে অনেকের গোপন তথ্য ফাঁশ করে দেয়। একাধিক চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সাথে আতাত থাকায় তার বদলির ক্ষেত্রে সে শেল্টার পায়। একাধিকবার ডিসি অফিস থেকে তাদের বদলির আদেশ আসলেও তাদের বদলি হয়নি। অর্থ দিয়ে তাদের বদলি বাতিল ঠেকিয়ে দেয় এই দুই কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জানান, আমার প্রতিষ্ঠানে বেশ কিছু সমস্যা ও দুর্ণীতি চোখে প্রতিষ্ঠানের উচ্চ কর্মকর্তারা আমাকে নানাভাবে হয়রাণী করলে আমি তা উপজেলা অফিসে অভিযোগ জানাই। এসব অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্তরা আগে থেকেই আমার প্রতিষ্ঠানে জানিয়ে দিতো। এতে আমাকে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে।
জানা যায়, মনিরুল ইসলাম মনির ২০০৯ সালের দিকে সদর উপজেলায় যোগদান করেন। তারপর থেকে এখনো বহাল রয়েছে তিনি। তার পরে অনেক বার তাকে বদলির আদেশ আসলেও তিনি তা পাশ কাটিয়ে সদর উপজেলাতেই রয়ে গেছেন। মনির এর ক্ষমতার জোড় কোথায়? যার জন্য তিনি এতো বছর এখানে রয়েছেন!
অভিযুক্ত মনিরুল ইসলাম মনির সরকারী নিয়ম-নিয়তী উপেক্ষা করে কীভাবে একই স্থানে দীর্ঘদিন যাবৎ চাকরী করে আসছেন জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ’কে বলেন, জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে আমাদের বদলির আদেশ হয়। স্যারেরা আমাকে ভালো জানেন বলেই আমি এ কার্যালয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ চাকরী করছি। এছাড়া আরিফুল ইসলামের বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও ফোনে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রিফাত ফেরদৌস জানান, মনিরুল ও আরিফুল এলাকার স্থানীয় হওয়ায় এবং পরিবার নিয়ে এলাকায় সেটেল হওয়ায় তারা দীর্ঘদিন একই অফিসে চাকরী করছেন। তারা সবসময় সব কাজে তাদেরকে কাছে পাওয়া যায় বিধায় এখানেই আছে।