A Top Ads

ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাড়কের গুরুত্বপূর্ণ একটি পয়েন্ট হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর চৌরাস্তা। ব্যস্ততম এই পয়েন্টকে ঘিরে সক্রীয় একটি চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পূর্বপাশের ফুটপাত থেকে সাধারণ নিরীহ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক দৈনিক ১০০ থেকে ২০০ টাকা চাঁদা আদায় করছে সিন্ডিকেটের সদস্যরা।

 

অভিযোগ রয়েছে, চাঁদাবাজির টাকা ক্ষমতাসীন দলের নেতা, মাস্তান, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন পাচ্ছে। সিন্ডিকেটের আলোচিত একটি নাম শামীম। স্থানীয়রা জানান, তিনি নিজেকে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে তার লোকজন নিয়ে নিয়মিত চাঁদা তুলছেন। অবৈধ দখলদারদের কারণে সড়কে পথচারী ও যানচলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হলেও পকেট ভারী হচ্ছে চাঁদাবাজদের। যার কারণে সড়ক দখল করে গড়ে উঠা ফুটপাতের অবৈধ দোকান-পাট স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ হয় না। বরং বছরের পর বছর ধরে ইদুর-বিড়াল খেলা চলে উচ্ছেদের নামে। আর ভোগান্তি ও হয়রানীর শিকার হচ্ছে পথচারীরা। মজার বিষয় হলো চাঁদাবাজরা গ্রেপ্তার বা আটক হলেও মাসোহারা পাওয়া লোকজন তাদের জামিনে অথবা থানা থেকে ছাড়িয়ে আনে।

সাম্প্রতিক সময়ে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশ উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে সড়কটিতে যান চলাচলের ব্যবস্থা করলেও তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কারণ চাঁদাবাজদের শেল্টারদাতা প্রভাবশালী হওয়ায় নানাভাবে দেনদরবার করে পুনরায় সড়ক দখলে উৎসাহ পাচেছ অবৈধ দখলদাররা।

জানা গেছে, কাচপুর  মোড় ঢাকা-সিলেট  মহাসড়কের পূর্ব পাশে অবৈধভাবে গড়ে উঠা সকল ফুটপাত দোকান উচ্ছেদ করে দেয় হাইওয়ে পুলিশ। এসব দোকান থেকে দৈনিক ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করতো সাবেক মেম্বার শাহ আলমের ভাই মাহাবুব। তিনি এই ফুটপাত ছেড়ে দেওয়ার পর  চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে নেয় শামীম   গংরা।

উচ্ছেদের পর ১ মাস পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশ ফুটপাত বসাতে দেননি। সম্প্রতি ওই ফুটপাতের চাঁদাবাজি বহাল রাখতে আবারো মাঠে নামে শামীম। তার কারিশমায় ফের দখল হয়ে পড়ে ফুটপাত। নিশ্চুপ হয়ে পড়ে হাইওয়ে পুলিশের ঝান্ডা অভিযান। নিশ্চুপ হয়ে পড়ে সোনারগাঁ থানা পুলিশ ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তরা।

শামীম ও তার সহযোগীরা আর্থিক ফাঁয়দা লুটতে প্রতি দোকান থেকে ৫ হাজার টাকা করে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা চাঁদা তুলেছে। আর প্রচার করে বেড়াচ্ছে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা ও হাইওয়ে পুলিশকে ওই টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে আবার ফুটপাতে দোকান বসিয়েছে।
প্রতিটি দোকান থেকে দৈনিক ২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে শামীম গংরা। পরিসংখ্যান মতে আড়াইশতাধিক দোকান থেকে দৈনিক ২০০ টাকা করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। যা মাসে দাঁড়ায় ১৫ লাখ টাকার উপরে।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক ফুটপাতের দোকানদার জানান, সওজ কর্মকর্তা ও হাইওয়ে পুলিশ ম্যানেজ করার কথা বলে শামীম  প্রত্যেক দোকানদার থেকে এককালিন ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা নিয়েছে। আগে দৈনিক ১০০ টাকা করে নিলেও এখন নিচ্ছে ২০০ টাকা করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শামীম সাংবাদিকদের  বলেন, বিভিন্ন দপ্তরের লোকজনের সাথে পরামর্শ করেই দোকান বসানো হয়েছে। তবে ৫ হাজার টাকা করে নিয়ে কাকে দিয়েছে জানতে চাইলে তিনি তা বলতে অনীহা প্রকাশ  করেন।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) মোঃ সাজ্জাদ খান জানান, ফুটপাত বসানো কোন অনুমতি তিনি দেননি। যথাশীঘ্র পুনরায় আবার ফুটপাত  উচ্ছেদ করা হবে।

নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী ইকবাল জানান, মহাসড়কের পাশে ফুটপাত বসার কোন অনুমতি দেয়া হয়নি। খুব দ্রুত এসব ফুটপাত উচ্ছেদ করা হবে

আগের সংবাদ দেখুনকিশোর গ্যাংয়ে আতঙ্কের জনপদ নারায়ণগঞ্জ
পরের সংবাদ দেখুনমসজিদ নির্মাণের রেকর্ড মিসরে