নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজঃনারায়ণগঞ্জের স্থানীয় একাধিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে সিদ্ধিরগঞ্জের মিতালী মার্কেট দোকানদার সমিতি। শুক্রবার (০৫ জুলাই) বিকালে সাইনবোর্ডস্থ সমিতির নিজস্ব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে মার্কেটটির দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হাজী মো. ইয়াসিন মিয়াকে জড়িয়ে 'মিতালী মার্কেট দখল করেছেন ইয়াসিন মিয়া' শীর্ষক সংবাদের প্রতিবাদ জানান বক্তারা। সেইসাথে সমিতির কর্মকর্তাদের মারধর, তহবিলের অর্থ আত্মসাৎসহ সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগ আনা হয় মো. জামান মিয়ার বিরুদ্ধে।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, জামান মিয়া বিভিন্ন সময়ে দোকানদার সমিতির কাগজপত্র, সীল, প্যাড জাল-জালিয়াতি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। সমিতিতে তিনি একাধিকবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডও চালিয়েছেন।
২০১৪ সালের ২৪ মে সমিতির কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সহ- সমাজকল্যাণ সম্পাদক শাহাদাৎ চৌধুরীকে মারধর করেন তিনি। এর আগে ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর যুগ্ম সম্পাদক সিরাজউদ্দৌলা ও কোষাধ্যক্ষ মোস্তাক আহমেদ তাজুকেও মারধর করেন জামান৷ বিভিন্ন খাত থেকে প্রতারণার মাধ্যমে মোটা অঙ্কের অর্থও আত্মসাৎ করেন তিনি।
এর মধ্যে মার্কেটের বিদ্যুতের প্রায় ৩১ লক্ষ টাকা, উন্নয়ন রশিদের প্রায় ১১ লক্ষ টাকা ও সদস্যদের কাছ থেকে ৪৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। এসব সুনির্দিষ্ট অপরাধের দায়ে ২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি তাকে সর্বসম্মতিক্রমে সমিতি থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার বহিষ্কারাদেশের বিষয়টি রেজিস্ট্রার্ড অব ট্রেড ইউনিয়নসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
বহিষ্কার হওয়ার পর থেকেই জামান মিয়া সমিতির বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করছেন জানিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়, সেই থেকে তিনি কাল্পনিক অভিযোগে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সমিতির সাধারণ সদস্যসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বর্তমান কমিটিকে হয়রানি করছেন। ২০১৮ সালের ১ মার্চ বর্তমান কমিটি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে একাধিক রিট করে নির্বাচিত কমিটির স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেছেন তিনি।
পরবর্তীতে বিষয়টি মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের দৃষ্টিগোচর হলে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের দ্বৈত বেঞ্চ জামান মিয়াকে ভিত্তিহীন, ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতের মূল্যবান সময় নষ্ট করায় দশ হাজার টাকা জরিমানা করে।
জামান মিয়ার বক্তব্যকে খণ্ডন করে আরো জানানো হয়, হাজী ইয়াসিন মিয়া মার্কেটটির সভাপতি। তার নেতৃত্বাধীন কমিটি সরকারের যথাযথ দপ্তরের অনুমোদিত,যার রেজিষ্ট্রেশন নং-১৬৯৮) অথচ জামান মিয়া দাবি করেছেন, ইয়াসিন মিয়া এই মার্কেটের কেউ না। বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে, জামান গং মার্কেটের ভেতরের বিভিন্ন দাগের জমির জাল দলিল তৈরি করেছে ও আশেপাশের মালিকদের জায়গা দখল করে নিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের পায়তারা করছে।
মিতালী মার্কেট জামে মসজিদের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন সমস্যা চলছিলো উল্লেখ করে জানানো হয়, একাধিক পক্ষের মধ্যে অনেক বছর ধরে একাধিক মামলা চলছিলো এই বিষয়ে। বর্তমান কমিটি দায়িত্ব গ্রহণের পরে বিষয়টি নিয়ে একাধিক বৈঠক করে। পক্ষের আইনজীবিদের মাধ্যমে কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মিতালী মার্কেট দোকানদার সমিতি ২৩০ দাগের ৩২ শতাংশ জমি মিতালী মার্কেটের জামে মসজিদের জন্য ওয়াকফ দলিল করেছিলেন জনৈক আবছার উদ্দীনের কাছ থেকে। আবছার উদ্দীনের পিতা সাত্তার কামাল জমিটি অন্যত্র হস্তান্তর করার ৩৮ দিন পর আবছার উদ্দিন ওয়াকফ দলিল করেন,
যার ফলশ্রুতিতে মিতালী মার্কেট জামে মসজিদের দলিলের আইনগতভাবে মালিকানা দাবির বৈধতা না থাকায় সকল পক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে মসজিদের স্বার্থ অক্ষুন্ন রেখে একটি আপোষনামা দলিল করা হয়৷
জামান মিয়ার অভিযোগকে নাকচ করে দিয়ে জানানো হয়, মার্কেটের দোকান ভাড়া কখনোই হাজী ইয়াসিন মিয়া নেন না। প্রত্যেক দোকান মালিক নিজ নিজ দোকানের ভাড়া নিয়মিতভাবে গ্রহণ করেন।
এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কার্যকরী সভাপতি আলহাজ্ব আমির হোসেন বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তাই জামান মিয়ার বক্তব্যের প্রতিবাদ গণমাধ্যমের সাহায্যে জানাচ্ছি।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন মিতালী মার্কেট দোকানদার সমিতির আলহাজ্ব ফেরদৌস আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক হাজী সিরাজউদ্দৌলা, বাবুল মিয়া, আমিনুল হক রাজু, সহ কোষাধ্যক্ষ মোস্তাক আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ছায়েদ আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন, সহ দপ্তর সম্পাদক মো. খোকন আহমেদ, প্রচার সম্পাদক মো. আবুল হাশেম, সহ প্রচার সম্পাদক হাজী মানিক সরাইসহ মার্কেটের ব্যবসায়ীবৃন্দ।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্য্যালয়: ৪র্থ তলা, রুপালী সুপার মার্কেট, চিটাগাংরোড, সিদ্ধিরগঞ্জ।
বার্তা কক্ষ: ইমেইলঃ [email protected] মোবাইলঃ 01711581634, 01921-116126
Powered by Sourav Bhuiyan