A Top Ads

নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজঃ নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়ে নির্বাচিত হন। গত পাঁচই জানুয়ারি নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়র পর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সংগঠন, উপজেলা প্রশাসন ও দলীয় নেতাকর্মীদের সংবর্ধনায় পাঁচ মাস সময় ব্যয় করেন। এতে এলাকাবাসীরা তার কাছ থেকে নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত ছিলেন।
২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ২০১৮ সালে নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সরকার জাতীয় পার্টির সাথে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন। এতে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকাকে আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয়।

পরপর দুই বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে লিয়াকত হোসেন খোকা সাধারণ মানুষের সেবায় সবসময় নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি নৌকার মনোনীত প্রার্থী আবদুল্লাহ আল কায়সারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এই নির্বাচনে আব্দুল্লাহ আল কায়সার বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর থেকে তিনি লাল গালিচা সংবর্ধনায় প্রায় পাঁচ মাস অতিবাহিত করেন। প্রতিটি অনুষ্ঠানে তার পাশের চেয়ারে বসতেন তার স্ত্রী রুবাইয়া আক্তার রুবি। সে সময়ে সাধারণ মানুষ তার সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। জরুরী প্রয়োজনেও সাধারণ মানুষ আব্দুল্লাহ আল কায়সারকে কাছে পাননি বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক সেবাবঞ্চিত মানুষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজকে জানান, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর আবদুল্লাহ আল কায়সার যেভাবে ফুলের শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়েছেন। সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সারাবাংলাদেশের কোন সাংসদ এভাবে ফুলের শুভেচ্ছা নেন নি। সে সময়ে শীতের মৌসুমে সাধারণ মানুষ কষ্ট পেলেও সেদিকে কোন ভ্রক্ষেপ না করে তিনি আত্মতৃপ্তি নিয়ে গা ভাসিয়েছেন সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে। এতে করে সাধারণ মানুষ তার প্রতি বিরুক্ত হয়ে বিরুপ প্রতিক্রিয়া করতে দেখা যায়।

পৌরসভা এলাকার এক বাসিন্দা নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজকে জানান, আবদুল্লাহ আল কায়সারকে অনেক আশা ভরসা নিয়ে আমরা ভোট দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছিলাম। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার তিনি যেভাবে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এতে তিনি আমাদের সাধারণ মানুষের কথা ভুলেই গিয়েছিলেন। সংবর্ধনা নিতে কাটিয়ে দিলেন পাঁচ মাস। আর তিন মাসের মাথায় পালিয়ে গেলেন এলাকা ছেড়ে।

এক আওয়ামীলীগ কর্মী নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজকে জানান, গত পাঁচ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতন হওয়ার পর সোনারগাঁয়ের আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বেঁচে আছে কিনা মরে গেছে কোন খোজ খরবই নিচেছন না সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সার। আমাদের অনেক নেতাকর্মীরা কষ্টে দিন যাপন করছেন। এছাড়া মামলা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। শান্তনা দেওয়ার মত কোন কিছুই পাইনি আমরা তার কাছ থেকে। তাই সুসময়ের কুকিলকে আমরা আর কাছে পেতে চাই না। দুঃসময়ে যিনি আমাদের পাশে থাকেন নি তার মত নেতাকে দিয়ে আমাদের আর কোন কাজে আসবে না।

মেঘনা শিল্পনগরী এলাকার এক বাসিন্দা জানান, আবদুল্লাহ আল কায়সার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর মেঘনা শিল্পনগরী ও কাঁচপুর এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় তার পছন্দের লোকদের দিয়ে শিল্প কারখানা দখল করে ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি।

মোগড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকার এক চালক নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজকে জানান, মোগড়াপাড়া ও মেঘনাঘাট বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন কয়েকলাখ টাকা চাঁদা উত্তোলন করতেন সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু ও তার নিয়োজিত সন্ত্রাসী বাহিনী। এছাড়া উপজেলা পরিষদের সকল প্রকার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন নান্নু ও তার সহযোগীরা। সকল কিছুই সাবেক এই সাংসদের ইশারায় পরিচালিত হতো।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সারের মুঠোফোনে কয়েকবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায় নি।

আগের সংবাদ দেখুননোয়াগাঁও বিএনপির নামধারী নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ
পরের সংবাদ দেখুনথানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকসহ পাঁচজনকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা