নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজঃ নারায়ণগঞ্জে শিল্পখাতে অস্থিরতা বেড়েই চলছে। গত ৫ আগস্ট সরকার পতন ও শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকে নানামুখী সমস্যা দেখা দিয়েছে। কারখানা মালিকদের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতাদের নামে।
এলসি খুলতে না পারা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনৈতিক মামলা, রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, শ্রমিক অসন্তোষ ও অর্ডার বাতিল হয়ে যাওয়াসহ নানা সমস্যার কারণে শিল্প মালিকরা বিপাকে রয়েছেন
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেক ব্যবসায়ী এলসি করতে পারছে না। যার কারণে কটন ক্রাইসিস সৃষ্টি হয়েছে। আর কটন ক্রাইসিসের কারণে সুতার দাম বেড়ে গেছে। অনেক স্পিনিং মিল সুতা দিতে পারছে না। সুতা যদি না থাকে তাহলে অর্ডার নেওয়া যাবে না।
এদিকে শ্রমিকদের কেউ কেউ উসকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এটা দেশের কেউ হতে পারে আবার বাইরের কেউ হতে পারে। আর শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে ফ্যাক্টরি যদি বন্ধ থাকে তাহলে কাজের চাপ পড়ে যায়। কারখানার কাজের ব্যাঘাত ঘটে। সময়মতো অর্ডার সরবরাহ করতে পারেন না কারখানার মালিকরা।
ফকির ফ্যাশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফকির কামরুজ্জামান নাহিদ বলেন, সরকার পতনের পর বিএনপির নাম ভাঙিয়ে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ অনুসারীদের মাধ্যমে এক হাজার কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। আমরা ছাড়াও আড়াইহাজারের বিভিন্ন কোম্পানি থেকে তিনি তিন কোটি, পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা আদায় করছেন। আমাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতে না পেরে গ্রুপের চার কর্ণধারের বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। পরে আমরা উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন পেয়েছি।
তবে এ বিষয়ে নজরুল ইসলাম আজাদের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আড়াইহাজারে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবু যে অত্যাচার করেছে তার সঙ্গে ফকির গ্রুপ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সেজন্য নেতাকর্মীরা ফুঁসে উঠেছে। যে দুটি মামলা হয়েছে সেখানে আড়াইহাজারের নেতাকর্মীরা সিদ্ধান্ত নিয়ে মামলা দিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি করার কোনো অভিযোগ নাই বরং যেখানে সমস্যা হয়েছে সেখানে গিয়ে আমি সমাধান করেছি।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহ-সভাপতি মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল বলেন, দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজদের শক্ত হাতে দমন করা। বদনাম হলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে। ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করতে হবে। মামলা বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। ব্যক্তিগত শত্রুতা কিংবা অন্য ঝগড়ার সূত্র ধরে মামলায় নাম উঠিয়ে দিচ্ছে। এটা থেকে সরে আসতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুজ্জামান মাসুদ বলেন, সভা-সমাবেশ করে মঞ্চে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিলেও পরক্ষণে তারা আবার ঝুট চাইছে। আমার চেম্বারও আক্রান্ত। ১০ লাখ টাকার দাবি ছিল তিন লাকে মিটিয়েছি। বিকেএমইএ ও চাঁদা দিয়েছে বাধ্য হয়ে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি যেহেতু স্বাভাবিক হচ্ছে না। আমার নিজেকে নিজের রক্ষার জন্য সচেষ্ট হতে হবে।
বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বিসিকসহ আশপাশ এলাকার পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। আর কিছু কথা অতিরঞ্জিত ছড়ানো হচ্ছে। সব পর্যায়ের চাঁদাবাজি বন্ধ করতে চেম্বার ও বিকেএমইএ সোচ্চার থাকবে। জেলার আইনশৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, মালিকপক্ষের কাছে কেউ চাঁদা চাইলে কিংবা চাঁদাবাজির শিকার হলে সেটি আমাদের জানালে ব্যবস্থা নেবো। এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্য্যালয়: ৪র্থ তলা, রুপালী সুপার মার্কেট, চিটাগাংরোড, সিদ্ধিরগঞ্জ।
বার্তা কক্ষ: ইমেইলঃ [email protected] মোবাইলঃ 01711581634, 01921-116126
Powered by Sourav Bhuiyan