A Top Ads

সোনারগাঁ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে শিকদার নামে এক ব্যক্তি প্রশাসন ভাঙ্গিয়ে একের পর এক অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন। থানা পুলিশ, ডিবি পুলিশ, সার্কেল এসপিসহ প্রশাসনের নামে প্রতিনিয়তই বিভিন্নভাবে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসলেও তাকে কেউ কিছুই করতে পারছেন না। উল্টো কোন ব্যক্তি তার বিরুধীতা করলেই থানায় মামলা, হামলাসহ নানান হুমকি আসে ওই ব্যক্তিকে ঘীরে। ফলে শিকদারের আতংকে দিনাতিপাত করছেন সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। নব্যশিকদারের খুঁটির জোড় কোথায় জানতে চান সোনারগাঁয়ের সচেতন মহল।

স্থানীয়রা জানান, সোনারগাঁয়ের হারিয়া গ্রামের বাসিন্দা জামান মিয়ার ছেলে শিকদার মিয়া এলাকায় তাফালিং করে বেড়াতে। এক প্রকার ভবঘুরে হিসেবে চলত তার জীবন। স্কুল ছাত্রীকে ইভটিজিং করতে কখনো পরোয়া করতো না শিকদার। ধীরে ধীরে থানা পুলিশের সাথে সখ্যতা হলো। সে পুলিশের সোর্স হয়ে এলাকার মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছেন। এলাকায় এক নামে তাকে চিনেন সোনারগাঁ থানার নামকরা সোর্স হিসেবে। সোর্স হয়েই শিকদারের পোড়া বারো। কখনো কখনো নিজেকেই পুলিশের লোক দাবি করে মানুষকে বোকা বানাচ্ছেন।

আবুল খায়ের নামে সোনারগা চৌরাস্তা এলাকার এক বাসিন্দা জানান, শিকদারতো পুলিশের সোর্স। থানায় কোন লোক ধরলে তার কাছে গেলেই সে ছাড়িয়ে দেয়। টাকার বিনিময়ে রফারফা করে দেন শিকদার। পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে পুরো সোনারগাঁ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শিকদার। সে বলেন, থানার ওসি, ওসি তদন্ত, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের আত্মীয়, আওয়ামীলীগের বড় নেতাও পরিচয় দেয় শিকদার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোনারগাঁয়ের এক বাসিন্দা জানান, পুলিশের সোর্স শিকদার পিরোজপুর বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় মেট্রোইন নামে একটি আবাসিক হোটেলের মালিকের কাছ থেকে প্রতিদিন তিন হাজার টাকা করে মশোয়ারা নিতেন প্রশাসনের নামে। পাশাপাশি নারী নিয়েই দিন রাত কাটাতেন শিকদার ওই হোটেরে। একাধিক বিয়ে পাগল শিকদার মেয়ে পেলেই থেকে যান আবাসিক হোটেলে। একের পর এক অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছেন শিকদার।তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলেই বেরিয়ে আসবে সকল অপকর্মের রহস্য।

এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে যায়, সোনারগাঁ থানা পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সার্কেল ‘খ’ এর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে হারিয়া এলাকার বাসিন্দা জামান মিয়ার ছেলে শিকদার মিয়া একের পর এক সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে বেড়াচ্ছেন।

পিরোজপুর বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় মেট্রোইন আবাসিক হোটেলের ভবন মালিক হোটেলটি বন্ধ করতে চাইলে শিকদার বিভিন্নভাবে তদবির শুরু করেন হোটেল বন্ধ না করার জন্য। সে ওই পিরোজপুর এলাকার শীর্ষ সমাজ সেবক মরহুম তাজুল ইসলাম মোল্লার ছেলে নূরে আলম সোয়েব মোল্লাকে বিভিন্নভাবে পেশার দিতে থাকেন হোটেল চালু করতে। তবে নূরে আলম সোয়েব মোল্লা রাজী না হওয়ায় তার সুনামক্ষুন্নে বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

শিকদারের সহযোগী হিেেসব কাজ করছেন টিপরদী এলাকার এসিআই কারখানা সংলগ্ন টিটু মিয়া। টিটু মিয়া নিজেকে সোনারগাঁ থানা তদন্ত ওসির কাছের লোক পরিচয় দিয়ে এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম চালাচ্ছেন বলেও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। সোনারগাঁ পৌরসভার দীঘিরপাড় গ্রামের বাসিন্দা আক্কাস আলীর ছেলে সুজন মিয়া নামে এক ব্যক্তি এসকল অপকর্মের সেল্টার দিচ্ছেন বলেও জানা যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নুরে আলম সোয়েব মোল্লা এই প্রতিবেদককে জানান, আমাকে ভুলভাল বুঝিয়ে হোটেল ভাড়া নেন জয় নামের এক ব্যক্তি। পরে দেখি তারা আবাসিক হোটেলের নামে উঠতি বয়সী ছেলে মেয়েদের দিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ করাচ্ছেন। যা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিনা। তাই আমি হোটেলটি বন্ধ করতে বারবারই তাদের নিষেধ করি। শিকদার হোটেলটি চালু রাখার জন্য আমাকে বারবারই বলে। চালু না রাখতে দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে হয়রানী করবে বলেও জানায় শিকদার। আমার জীবন থাকতে আমি অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকবে এমন হোটেল ভাড়া দিবো না।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে এলাকায় অপকর্ম করে বেড়ালে তাকে কোনভাবেই ছাড় দেওয়া হবে। খোজখবর নিয়ে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ জানান, আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কাজ করলে অথবা কোন অপরাধ সংগঠনিত করলে ওই হোটেলে অভিযান পরিচালনা করে বন্ধ করা হবে। প্রশাসনের নাম ব্যবহার করে কেউ যদি আবাসিক হোটেল দিয়ে অসামাজিক ব্যবসায় জরান তাকেও কোন ভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।

আগের সংবাদ দেখুনঅপহৃত স্কুল ছাত্রী রাজধানী থেকে উদ্ধার,অপহরণকারী গ্রেপ্তার
পরের সংবাদ দেখুনবিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ