
নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড রেন্ট এ কার কমিটির সভাপতি সালাহ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতি মাসে প্রায় তিন লাখ টাকা চাঁদা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রেন্ট এ কারের মালিক ও ভুক্তভোগীরা জনান, রেন্ট এ কার মালিক সমিতির সভাপতি এক সময়ের বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক চাঁদপুর এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম নামে দুই ব্যক্তি প্রতি হায়েজ গাড়ি থেকে প্রতি মাসে ১৪’শ ও প্রতি প্রায়ভেটকার থেকে ১ হাজার টাকা স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ
(ডিবি), থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশের নামে উত্তোলন করেন তারা। প্রায় একশ হায়েজ গাড়ি ও দেড়শ প্রাইভেট কার থেকে প্রতি মাসে প্রায় তিন লাখ টাকা টাকা চাঁদা উত্তোলন করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেন্ট এর কারের এক প্রাইভেটকারের মালিক অভিযোগ করে বলেন, আমরা এ রেন্ট এ কারে গাড়ি নতুন ভর্তি করতে করলে বা দিতে হলে আট থেকে দশ হাজার টাকা সালামি দিতে হয়। প্রতি মাসে প্রাইভেটকারের জন্য এক হাজার ও হায়েজ গাড়ির জন্য চৌদ্দ’শ টাকা দিতে হয়। মাসিক চাঁদা না দিতে পারলে বা অস্বীকৃতি জানালে রেন্ট এ কারে গাড়ি রাখতে দেওয়া হয় না। উল্টো বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়।
রেন্ট এ কারের এক চালক জানান, মাস শেষ হতে না হতেই তাদের দাবিকৃত চাঁদার টাকা সময় মত দিতে হয়। যদি টাকা দিতে দেরি হয়, তাহলে আমাদের গাড়ি সাইট করে রাখা হয়। আমরা তাদের কাছে এক প্রকার জিম্মি হয় পড়েছি। চলতি মাস থেকে প্রতি গাড়ি থেকে এক’শ টাকা করে চাঁদা বেশি নেওয়া হচ্ছে।
অনুসন্ধান চালিয়ে জানাযায়, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিনের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন সালাহ উদ্দিন মিয়া, কতিপয় আওয়ামীলীগ নেতাদের ম্যানেজ করে সুকৌশলে সভাপতি পদটি বাগিয়ে নেন তিনি। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টিগাংরোড রেন্ট এ কারের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজকে জানান, এসকল চাঁদার টাকা বিভিন্ন দফতরে দিতে হয়। সংগঠনের সভাপতি সালাহউদ্দিন সাহেব সকলকিছু ডিল করেন থাকেন।
চিটাগাংরোড রেন্ট এ কারের সভাপতি সালাহ উদ্দিন মিয়া নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজকে জানান, সরকারি কাজে ব্যবহার করা হয় একটি গাড়ি দিয়ে সেই গাড়ির ভাড়া বাবদ গাড়িগুলো থেকে চাঁদা উঠানো হয়। পাশাপাশি সুপারভাইজারের বেতনের জন্য এই টাকা তোলা হয়। তবে সরকারি জায়গায় রেন্ট এ কার বসিয়ে গাড়ি থেকে চাঁদা তুলছেন এমন প্রশ্নে তিনি কোন সদত্তোর দিতে পারেন নি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামলীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়া নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজকে জানান, দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ চাঁদাবাজি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে জোড় দাবি জানাচ্ছি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজকে জানান, রেন্ট এ কারের চাঁদা আদায়ের বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে চাঁদাবাজদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস নারায়নগঞ্জ ক্রাইম নিউজকে জানান, সরকারি জায়গা দখল করে রেন্ট কার স্ট্যান্ড করায় সাধারণ জনগন ও পরিবহন চলাচল করতে মারাত্মক বাধা সম্মুখিন হচ্ছেন। এসকল অবৈধ স্ট্যান্ড অচিরেই অপসারণ করার জন্য আমরা খুব শিগ্রই ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব-১১ এর অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজকে জানান, চাঁদাবাজির সাথে জড়িতদের কোনভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রনহ করা হবে।