
নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলো এলাকায় বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে মেতে উঠেছেন আন্ত:জিলা ট্টাক চালক শ্রমিক ইউনিয়নের সাইলো শাখার সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান দিপু। তার চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন পরিবহন চালক,মালিক ও শ্রমিকরা। এক সময় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির একনিষ্ঠকর্মী জাহিঙ্গার আলম রিপনের প্রিয় বন্ধু মিজান সময়ের প্রয়োজনে নিজেকে আওয়ামীলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে দাবারিয়ে বেড়াচ্ছেন পুরো এলাকা।
অন্যের ভেজাল জমি ক্রয়-বিক্রয়, ওয়ারিশের জমি ক্রয়-বিক্রয় এবং আধিপত্য আর মাদকের শেল্টারদাতা মিজানুর রহমান দিপু।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাগেছে, সাইলো এলাকায় পান থেকে চুন খষলেই আধিপত্য বিস্তার করে মিজানুর রহমান মিজান। তার রয়েছে হুন্ডাবাহিনী ও কিশোরগ্যাং গ্রুপ। দেখলেই যে কারোরই মনে হবে তিনি যেন কোন এক ডাকু বাহিনীর নেতা। মিজানুর রহমান দিপুর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে সবর্দাই পাশে তারই আপন ছোট ভাই মিনহাজ মিয়া। মিজানুর রহমান দিপুর আরেক সহযোগী রয়েছে তারই ফুপাতো ভাই মাসুদ মিয়া।
মিনহাজ মিয়ার কাজ হলো সাইলো থেকে যত গাড়ি বের হয় সবগুলোর চাঁদার টাকা মিজানুর রহমান দিপুর কাছে পৌছানো। এছাড়া ও চেরাই গম নিয়ন্ত্রণ। বাংলাদেশ আন্ত:জিলা ট্টাক চালক শ্রমিক ইউনিয়নের নামে প্রতি গাড়ি থেকে একশত বিশ টাকা উত্তোলনের কথা থাকলেও মিজানুর রহমান মিজানের নির্দেশে প্রতি গাড়ি থেকে টাকা উত্তোলন করা হয় তিনশত টাকা করে। প্রতিদিন সাইলো থেকে প্রায় আশি থেকে একশত গাড়ি গম বোঝাই করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যায়। এছাড়াও চোরাই গম ও শ্রমিক নেতা হিসেবে সবার আগেই তার গাড়ি লোড করে দিতেই হবে অন্যথায় এখানেই সন্তাসী কার্যকলাপ করেন মিজানুর রহমান দিপু।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাইলো এলাকার এক বাসিন্দা নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজকে জানান, সাইলো এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক হাজী আনিসুর রহমানের মৃত্যুর পর বাবা হাবিবুর রহমান ও চাচা আন্তঃজিলা ট্টাক চালক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কবির হোসেনের আশকারায় মিজানুর রহমান দিপু বেপরোয়া হয়ে উঠেন। চাঁদাবাজি, জালজালিয়াতির মাধ্যমে জমি ক্রয় বিক্রয়, ওয়ারিশের জমি ক্রয়সহ সাইলো এলাকায় নব্য আতংক মিজানুর রহমান দিপু।
গেল কয়েক বছর আগেও মিজানুর রহমান মিজানের আরেক সহযোগী বসির উদ্দিন বসু আর মিজানুর রহমান দীপু সাইলো এলাকায় অস্ত্র তৈরীর কারখানায় ডিবির অভিযানে অদৃশ্য ইশারায় হাতে নাতে ধরা খেয়েও যেন পড়েন নি। এই ঘটনায় আটককৃতদের তথ্যে এই দুই প্রিয় বন্ধুকেও মামলায় আসামী করা হয়। অস্ত্রের মদদ দাতা ও অস্ত্র তৈরীর হোতাদের সাথে সক্ষতা থাকায় আর ঘটনাটি পুরোপুরি এলাকার মানুষের কাছে জানাজানি না হওয়ায় আগেই এলাকা ছাড়েন মিজান আর বসু।
দেড় মাস পর কোর্টে হাজিরা দিতে গিয়ে আইনের জালে আটকা পড়ে জেল খাটেন এরা। তারপর আবার পুনরায় এলাকায় এসে তাফালিং শুরু করেন। গ্যাঙ্গের লিডিং দিতে শুরু করে মিজান ও বসু বাহিনী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেবতী মোহন স্কুলের সামনে কথা হয় ওই এলাকার এক মুরব্বীর সাথে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, মিজান যে এমন হবে আমরা স্বপ্নেও ভাবি নি। সে মাদকসেবী, নারী কেলেংকারী, মাদকের শেল্টারদাতা চাঁদাবাজি হিসেবে এলাকায় কাজ করে। সবসময় মাদকে আসক্ত থাকেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের এক প্রবীন সদস্য বলেন, দলের নাম ভাঙ্গিয়ে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন কর্মকান্ড চালাচ্ছেন সাইলো এলাকার মরহুম আনিসুর রহমান আনিসের ভাতিজা মিজানুর রহমান দিপু। তার কর্মকান্ডে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে আছি। এই ধরনের অপরাধীদের লাগাম টেনে ধরা উচিৎ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্ত:জিলা ট্টাক চালক শ্রমিক ইউনিয়নের সাইলো শাখার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান দিপু বলেন, আমরা আন্ত;জিলার নামে প্রতি গাড়ি থেকে একশ থেকে এক বিশ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে থাকি। এসকল চাঁদার টাকা শ্রমিকদের কল্যাণে ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তার কোন সদুত্তোর দিতে পারেন নি তিনি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, পরিবহনের নামে কেউ চাঁদাবাজির সাথে জড়িত থাকলে তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।
র্যাপিড এ্যাকশন র্যাটালিয়ান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে:কর্নেল তানভির মাহমুদ পাশা জানান, চাঁদাবাজির সাথে জড়িত যেই হউক না কেন তাদেরকে কোনভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। সাইলোগেইট এলাকার চাঁদাবাজির বিষয়টি খতিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
„