
নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজঃ দুর্গাপূজার টানা চারদিনের ছুটিতে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে হাজার হাজার মানুষ। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বেড়েছে অন্যান্যদিনের চেয়ে কয়েকগুন বেশী। ফলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রায় আট ঘন্টাব্যাপী পনের কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে মহাসড়কে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।
তবে পরিবহন শ্রমিক মালিক ও যাত্রীরা অভিযোগ করেন হাইওয়ে পুলিশের নিস্কৃয়তায় যানজটে নাকাল হয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা পার করছেন তারা। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এই যানজটের সৃষ্টি হয়। তখন সাইনবোর্ড থেকে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রায় পনের কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে যানজট সামান্য কমলেও যাত্রীদের মাঝে স্বস্থি ফিরেনি।
যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, গত পাঁচ আগষ্ট সরকার পতনের পরপর সারা দেশে হাইওয়ে পুলিশ নিস্কিৃয় পড়ে। এতে মহাসড়কের আশাযাওয়া করা যাত্রীরা প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে বসে থাকতে হয়। হাইওয়ে পুলিশের নিস্কিয় ভুমিকার কারণে এই যানজটের সৃষ্টি হয় বলে তারা দাবি করেন। তবে হাইওয়ে পুলিশের দাবি তাদের পুলিশের সদস্যরা মহাসড়কে যথাযতভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। পূজার ছুটির কারণে মহাসড়কে কয়েকগুন গাড়ি বেড়ে যাওয়ায় সকাল থেকেই যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে যানজট ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে।
যাত্রীরা আরো জানায়, ভোর থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট ধীরে ধীরে দীর্ঘ হতে থাকে। এতে দুরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসসহ নানা ধরণের যানবাহন আটকে পড়লে যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে বাধ্য হয়।
সিলেটগামী একটি গাড়ির কাউন্টারের ম্যানাজার জানান, গতকাল রাত থেকে যাত্রীর চাপ বাড়তে থাকে। তবে রাস্তয় প্রচুর যানজট থাকায় গাড়িগুলো সিডিউল মত আসতে পারছে না। অনেক যাত্রী বসে আছে তবে গাড়ি সময়মত আসতে না পারায় তারা যেতে পারছে না।
চট্টগ্রামগামী যাত্রী আফসার হোসেন বলেন, ভোরে সায়েদাবাদ থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে সাইনবোর্ড থেকে কাঁচপুর সেতু পার হতেই তিন ঘন্টা সময় লেগে যায়। জানিনা কখন গন্তব্যে পৌঁছাতে পারব।
কুমিল্লাগামী যাত্রী আব্দুল করিম জানান, ভোর ছয়টায় সায়দাবাদ থেকে গাড়িতে উঠলেও কাঁচপুর সেতু পার হতেই সময় লেগেছে তিনঘন্টা। গন্তব্যে কখন, কিভাবে যাব কিছুই বলতে পারছিনা।
শ্যামলী পরিবহনের চালক আনোয়ার হোসেন আনু জানান, ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার উদ্দেশ্যে গাড়ি নিয়ে রওয়ানা হয়েছি। কাঁচপুর সেতু পার হতেই প্রায় চার ঘন্টা সময় বসে থাকতে হয়েছে। কখন যে সিলেট গিয়ে পৌঁছাতে পারব কিছুই বুঝতে পারছিনা। তিনি বলেন, পূজার ছুটিতে রাস্তায় প্রচুর গাড়ি এজন্যই এই যানজট। তবে হাইওয়ে পুলিশ আগের মতো ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করায় প্রতিদিন যানজটের কবলে পড়ছি আমরা।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল হক জানান, পূজার ছুটিতে মানুষ গ্রামে ছুটছে। এতে ভোর থেকেই মহাসড়কে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে। সাথে সাথে যানজটও বাড়তে থাকে। আমাদের টিম সকাল থেকেই কাজ করছে। এছাড়া মদনপুর, মোগরাপাড়া, লাঙ্গলবন্দ এলাকায় প্রচুর খানাখন্দ থাকায় গাড়ি খুব ধীরগতিতে যাচ্ছে। এজন্যই এমন যানজটের সৃষ্টি। হাইওয়ের পুলিশের নিস্কিৃয়তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা গতকাল রাত থেকে মহাসড়কে পর্যায়ক্রমে দায়িত্বপালন করছি। কোনভাবেই আমরা দায়িত্ব পালনে অবহেলা করছি না।