নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ
আড়াইহাজার পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট না দেয়ায় চার ভোটারকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এই নির্বাচনে জগ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমানের অভিযোগ, বেলা ১১টার দিকে পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের নাগের চর মাদ্রাসা কেন্দ্রে জগ প্রতীকে ভোট দেয়ায় ভোটারদের মারধরের ঘটনা ঘটেছে। হাবিবুর রহমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং সাবেক পৌর মেয়র। তিনি পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
হাবিবুর বলেন, নিজের এলাকা হওয়ায় এখানে ৯৫ শতাংশ ভোট আমার। এই কারণে নৌকার লোকজন কেন্দ্রটিকে দখলে নিয়ে রেখেছে। বেলা ১১ টার দিকে নাগের চর মাদ্রাসা কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সফিকুল ইসলাম ওরফে শরিফ ও তার সমর্থকরা চার ভোটারকে মারধর করেছে। পরে পৌরসভা যুবলীগ নেতা শামীম মিয়া তার সমর্থকদের নিয়ে নাগের চর মাদ্রাসার পুরুষ ও নারী কেন্দ্র দুটি দখলে নিয়ে ভোটারদের নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করেন।
এছাড়াও নৌকার প্রার্থী সুন্দর আলীর লোকজন ৭ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্র দখলে নিয়েছিল। তারা বুথের ভেতর ঢুকে জোর করে নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করেছে। বহিরাগতরা কেন্দ্রে ঢুকে ভোটারদের ভয় দেখায় এবং মারধর করে। মারধরের শিকার দুই জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন ওই এলাকার মো. কামাল উদ্দিন ও মো. রয়েল।
নৌকায় ভোট না দেয়ায় মারধর করা হয়েছে দাবি করে কামাল উদ্দিন বলেন, আমি ভোট দিয়া বের হবার পরেই উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম শরীফ ও তার লোকজন আমার শার্টের কলার ধরে চর-থাপ্পর দিতে থাকে। আমি নাকি নৌকায় ভোট না দিয়া অন্য মার্কায় ভোট দিছি, এমনটা কেন করছি, এই বইলা মারতে থাকে। তারা মারতে মারতে বলে, "নৌকায় কেন ভোট দেস নাই?" শুধু আমারে না, আরও কয়েকজনকে তারা মারছে। সবাইরে নৌকায় ভোট দিতে তারা বাধ্য করছে।'
বেলা সোয়া এগারোটায় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোট কক্ষগুলোর সামনে ভোটারদের দীর্ঘ সাড়ি। এসময় ভোটাররা অভিযোগ করেন, ধীর গতিতে ভোট গ্রহণ হচ্ছে। দীর্ঘ সময় দাড়িয়ে থেকেও তারা ভোট দিতে পারছেন না। পরে ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, অন্ধকার কক্ষে ভোটারদের তীব্র চাপ। এসময় একটি কক্ষের গোপন বুথে দুজনকে দেখা গেছে। এসময় নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তাফা রাসেল ওই কেন্দ্রটি পরিদর্শনে আসেন। পরে গোপন বুথে থাকা ওই ব্যক্তি সেখান থেকে চলে যান। তার নাম পরিচয় জানা যায় নি।
নাগের চর মাদ্রাসার পুরুষ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. শাহজাহান বলেন, 'কিছু নির্বোধ এসে ঝামেলা তৈরির চেষ্টা করেছে। আমি পুলিশের সহায়তায় তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেছি। দুইবার ধমক দিয়েছি। তারা কথা শোনেনি। আমি তখন রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।' এতে ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল কি না জানতে চাইলে বলেন, 'টানা ঝামেলা হয়েছে তা না। ফাঁকে ফাঁকেই এমনটা হচ্ছে।
পরে গোলাম মোস্তফা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, 'সবগুলো কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। উৎসবমুখর পরিবেশে মানুষ ভোট দিচ্ছে। ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সাথে টুকটাক কথা-কাটাকাটি হয়। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।'
এসব বিষয় জানতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সুন্দর আলীর মুঠোফোনে ফোন করা হলে তিনি সাড়া দেননি।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্য্যালয়: ৪র্থ তলা, রুপালী সুপার মার্কেট, চিটাগাংরোড, সিদ্ধিরগঞ্জ।
বার্তা কক্ষ: ইমেইলঃ [email protected] মোবাইলঃ 01711581634, 01921-116126
Powered by Sourav Bhuiyan