A Top Ads

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি

সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকার বাসিন্দা মো. আকতার হোসেন ওরফে ফার্ণিচার আকতারের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে ভূমিদস্যুতার। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে আকতার হোসেনের এলাকায় বেশ নাম-ডাক। সেই সুবাদে পাইনাদী’সহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় নিরীহ সাধারণ মানুষের জায়গা-জমিতে গিয়ে বিরোধ সৃষ্টি করতে বেশ পাকা। এমন একাধিক ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অসংখ্য অভিযোগ এবং নারায়ণগঞ্জ কোর্টে একাধিক মামলা হয়েছে। জমি সংক্রান্ত নানা বিচ্ছিন্ন ঘটনায় আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়াই তার মুল উদ্দেশ্য।

স্থানীয়রা জানান, এলাকার জমি সংক্রান্ত অধিকাংশ ঘটনায় আকতার হোসেনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। সাবেক কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হওয়ার সুবাদে সবার কাছে এলাকায় খুব খ্যাতি তার। সেই সুবাদে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নিরীহ মানুষ এলাকায় জায়গা ক্রয় করে বাড়ি করতে গেলে বাড়ি নির্মাণের জন্য আকতার কাছ থেকে বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী ক্রয় করতে চাপ সৃষ্টি করে। রাজি না হলে তার লোকজন নিয়ে বাড়ির মালিক পক্ষের উপর হামলা ও মারধর করে। এছাড়া কারও কোন জমি সংক্রান্ত জটিলতা সৃষ্টি হলে অর্থের বিনিময়ে পক্ষপাতিত্ব করে নিজে ঝামেলায় জড়ায়। পরে ভুক্তভোগীদের শায়েস্তা ও দমন করতে থানায় বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ এবং আদালতে মোকদ্দমা দিয়ে হয়রানি করে মানুষকে নাজেহাল করে।

জানা যায়, পাইনাদী এলাকার বেশির অংশ বাসিন্দা অন্যান্য জেলার হওয়ায় কেউ আকতারের বিরুদ্ধে দ্বন্দে উৎড়িয়ে উঠতে পারেনা। স্থানীয় প্রভাব প্রয়োগ করে তাদেরকে দমন করে রাখে। মাঝে-মধ্যে কেউ সাহস দেখালেও স্থানীয় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সুবিধা ব্যবহার করতেও পটু এই আকতার। প্রায়ই তাকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তা, স্থানীয় সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সাথে দৌড়ঝাপ করতে দেখা যায় জায়গা-জমি কেন্দ্রিক বিভিন্ন ঝামেলা সংক্রান্ত কাজ নিয়ে। যার ফলে কেউ ফলপ্রসু ভাবে তার বিরুদ্ধে কোন ধরণের ব্যবস্থা নিতে পারে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। তাছাড়া পাইনাদী এলাকায় সে তার প্রভাব বিদ্যমান রাখতে সর্বদাই সবার সাথে উচ্চস্বরে জোর গলায় কথা বলে থাকে।

১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর বর্তমানে ক্ষমতায় না থাকলেও আকতারের ভূমিদস্যুতার কাছে কোন ধরণের ভাটা পড়েনি। জমি সংক্রান্ত জটিলতা সৃষ্টি, বিরোধ নিষ্পত্তি, দখল, চাঁদাবাজি সহ সকল অপকর্ম দিব্যি চলছে আগের মতই। পাইনাদী এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে তার নামে অনেকগুলো জমির মালিকানা সাইনবোর্ড চোখে পড়েছে। নানাভাবে জমি কেন্দ্রিক ঝামেলা বাধিয়ে নিরীহ সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে এসব জমির মালিকানা অর্জন করেছে সে। বয়স অনেক হলেও তার এসব অপকর্ম কমছেনা। যার ফলে আশেপাশের বাসিন্দারা পাইনাদী এলাকায় বাড়ি তৈরি করেও শান্তিতে বসবাস করতে পারছেনা। জুলুমের ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতেও সাহস পায় না।
সম্প্রতি পাইনাদী এলাকার বাসিন্দা আলমগীর হোসেন সাজিদ নামে এক ব্যক্তির জমি দখলে নিতে আকতার ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী সাদিক জানান, আমি পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত ৭২ শতাংশ জমি টিন শেডের ঘর সহ রেখে বাবার অসুস্থ্যতার কারণে দেশের বাড়ি দীর্ঘদিন ছিলাম। গত কয়েক মাস আগে এলাকায় এসে দেখি আমার জমিতে কোন ঘর নেই। পরে আমার জমিতে গেলে রফিকুল ইসলাম তপু ও হাবিবুর রহমান গং’রা উক্ত জমি তাদের নিজেদের বলে দাবি করছে। আমাকে সেখানে যেতে দিচ্ছেনা। পরে আমি তাদের বিরুদ্ধে আদালমে মামলা দায়ের করি। এরপর থেকে আকতার হোসেন নানাভাবে আমাকে হুমকি-ধমকি প্রদান করে আসছে। সে তার বাহিনী দিয়ে আমার টিন শেডের ঘর রাতের আধারে উধাও করে ফেলেছে বলে প্রতিবেশিদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। মূলত এই আকতার জমির কোন মালিক বা অংশীদার নয়। বিবাদীদের পক্ষ নিয়ে আমাকে উচ্ছেদের পায়তারা করছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আকতার হোসেন বলেন, আমি একটি জমি বায়না করেছি। উক্ত জায়গাটিতে কাজ করতে গেলে মাসুদ ঢালী নামে এক ব্যক্তি সহ কয়েকজন আমার কাছে চাঁদা দাবি করেছে। আমি তাদের ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির মামলা করেছি আদালতে। তাছাড়া আমি কখনও কারও কাছে চাঁদাবাজি, জমি দখল বা কোন ধরণের হয়রানি করেছি বলে এলাকায় কেউ বলতে পারবেনা।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সানোয়ার জানান, আদালত থেকে তদন্তের জন্য আকতার হোসেনের মামলাটি থানায় এসেছে। বিষয়টি গুরত্বের সাথে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি প্রতিবেদন আকারে আদালতে প্রেরণ করা হবে।

আগের সংবাদ দেখুনসিদ্ধিরগঞ্জে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত ২, মামলা
পরের সংবাদ দেখুনতিন শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দিলেন মেয়র