নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকার দলিল লেখক নূর হোসেনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের জমি দখল, জাল দলিল করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীরা নূর হোসেনের দলিল লেখকের সনদ বাতিল করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন।
এলাকাবাসীরা জানায়, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি তেরা মার্কেট এলাকার বাসিন্দা মোকলেসুর রহমানের ছেলে দলিল লেখক নূর হোসেন যার সনদ নাম্বার-৯৫। সম্প্রতি জালকুড়ি দশপাইপ এলাকায় আব্দুস সামাদ মিয়াগংদের পৈত্তিক সম্পত্তি প্রায় আট কোটি টাকা মূল্যের ২৮ শতাংশ জমি নামজারি ছাড়া ও হাতেলেখা খাজনা দিয়ে দলিল বানিয়ে জোড় পূর্বক শহিদুল্লাহ মিয়ার কাছে জমিটির বায়না করেছেন।
এই জমিটি জোড় পূর্বক দখল করে বালু ভরাট ও বাউন্ডারি নির্মাণ করে দখল করার চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। অতি অল্প সময়ে নূর হোসেন অবৈধ ভাবে সাধারণ মানুষের জমি দখল ও বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। মিজমিজি তেরা মার্কেট এলাকায় তিন কাঠার উপর পাঁচতলা আলিশান বাড়ি, পাশেই বিশাল জায়গার উপর তিন তলা বাড়ি, অর্ধকোটি টাকা মূল্যের গাড়ি, নামে বেনামে দলিল লেখক নূর হোসেনের বিঘায় বিঘায় জমি রয়েছে বলে এলাকাবাসীরা নিশ্চিত করেছেন।
তার একান্ত সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন, তার সহকারি দলিল লেখক ইসহাক মিয়া, তার লাইসেন্স নাম্বার-২৯৩। ইসহাক মিয়ার লাইসেন্সের মাধ্যমে এই জমিটি বায়না করেন। এছাড়াও ওই এলাকার মাহবুব মিয়া, জহির হোসেন ও ভাগিনা সিরাজুলের মাধ্যমে এলাকায় ভেজাল জমি ক্রয় বিক্রয় দখলসহ তান্ডবলীলা চালাচ্ছেন তিনি।
আব্দুস সামাদ মিয়া নামে এক ভুক্তভোগী জানান, জালকুড়ি দশপাইপ এলাকায় তাদের বাপদাদার সম্পদ ভোগ দখলকৃত জমি নকল কাগজ তৈরী করে জোরপূর্বক দখল করার পায়তারা চালা্েচছন প্রতারক কথিত দলিল লেখক নূর হোসেন।
সে এলাকায় পুলিশের সোর্স ও মাস্তানদের দিয়ে জমি দখললের চেষ্টা চালাচ্ছেন। একজন দলিল লেখকের দায়িত্ব হলো সে জমি রেজিষ্ট্রি করার কিন্তু সে আইনকে তোয়াক্কা না করে এলাকায় একজন শীর্ষ ভুমিদস্যু হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তার লাইসেন্স বাতিল করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করার দাবি জানান তিনি।
সেলিনা বেগম নামে জালকুড়ি এলাকার এক ভুক্তভোগী জানান, নূর হোসেনের বিরুদ্ধে জাল দলিলের মাধ্যমে অন্যের জমি দখলে নেওয়া, নকল দলিল বানিয়ে মানুষের জমি বায়না করা, জায়গায় সাইনবোর্ড সাটানোসহ বিস্তার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও মানুষকে প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে।
হালেমা বেগম জানান, আমরা কিছুই জানিনা, দলিল লেখক নূর হোসেন ও তার সহযোগী ইসহাক মিয়া দলিল বানিয়ে আমাদের জমি কিভাবে কিনেছেন আমাদের তা বোধগম্য নয়। আমরা এই দুই প্রতারক দলিল লেখকের প্রতারণার বিচার দাবি করছি প্রশাসনের কাছে।
লাভলী আক্তার জানান, দলিল লেখক নূর হোসেন অন্যের জমি জাল দালিল বানিয়ে কিনে ফেলেন, জোড় পূর্বক জবর দখল করেন। পরে মোটা অংকের টাকা নিয়ে জমি বিক্রি করেন। এলাকায় জমি নিয়ে মানুষের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি করেন এই নূর হোসেন।
এ পর্যন্ত এলাকায় যত জমি নিয়ে বিরোধ হয়েছে, এই দলিল লেখক প্রতারক নূর হোসেন ও ইসহাক মিয়ার জন্যই হয়েছে। এই এলাকায় দুই দলিল লেখকের লাইসেন্স বাতিলসহ তাদের বিচার দাবি করছেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে নূর হোসেন জানান, আমি কোন ভেজাল জায়গা, জমির ব্যবসার সাথে জড়িত নই। দলিল লেখার বিষয়ে কেউ আমার কাছে আসলে তাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগীতা করে থাকি।
এ বিষয়ে জানতে নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিষ্টার খন্দকার জামীলুর রহমান জানান, দলিল লেখক নূর হোসেন যদি অন্যায় কোন অপরাধে জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে আমরা খোঁজ খবর নিয়ে শিগ্রই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করব।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্য্যালয়: ৪র্থ তলা, রুপালী সুপার মার্কেট, চিটাগাংরোড, সিদ্ধিরগঞ্জ।
বার্তা কক্ষ: ইমেইলঃ [email protected] মোবাইলঃ 01711581634, 01921-116126
Powered by Sourav Bhuiyan