
নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ
আজ ৫ জুন ২০২৩ বিশ্ব পরিবেশ দিবস। জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচী “ইউনাইটেড ন্যাশন ইনভায়রনম্যান্ট প্রোগ্রাম” কর্তৃক এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে “সলুশন টু প্লাস্টিক পলুশন” যার ভাবানুবাদ করা হয়েছে “প্লাস্টিক দূষণের সমাধানে সামিল হই সকলে।” এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের স্লোগান নির্ধারণ করেছে “বিট প্লাস্টিক পলুশন” যার ভাবানুবাদ করা হয়েছে “সবাই মিলে করি পণ, বন্ধ হবে প্লাস্টিক দূষণ”। এর মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে প্লাস্টিক দূষণরোধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট হওয়ার মাধ্যমে পরিবেশ বাঁচানোর তাগিদ নিহিত রয়েছে।
দিবসটি উদপানের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেছে। যার মধ্যে ছিল- চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা, সাইকেল র্যালি, শোভাযাত্রা, বিনামূল্যে গাছের চারা বিতরণ, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান। সাইকেল র্যালিটি নারায়ণগঞ্জ শহর প্রদক্ষিণ করে।
আজ ৫ জুন পরিবেশ দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ৯টায় বেলুন উড়িয়ে পরিবেশ দিবসের উদ্বোধন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ। এর পরই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে হতে শোভাযাত্রা ও সাইকেল র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত র্যালিতে জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ ও পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেলসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানার প্রতিনিধিবৃন্দ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীবৃন্দ, এনজিও সংগঠন, সুশীল সমাজ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটিসহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, সিভিল সার্জন এ এফ এম মুশিউর রহমান, পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাকিব আল রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ পরিবেশ রক্ষার্থে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা বা এসডিজির গোল-৬, ১১, ১৩, ১৫ নিশ্চিত করার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি এসডিজি এর ৬নং গোলে ক্লিন ওয়াটার এন্ড সেনিটেশন, ১১নং গোলে ক্লাইমেট একশন, ১৩নং গোলে লাইফ বিলোও ওয়াটার, ১৫নং গোলে লাইফ অন ল্যান্ড ইত্যাদি পরিবেশগত বিষয় গুরত্বের সাথে তুলে ধরেন।
পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল সুস্থ ও দূষণমুক্ত পরিবেশের স্বার্থে সকলকে সচেতন হওয়ার এবং অন্যকে সচেতন করার বিষয়টি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা না ফেলাসহ আইন মানার ক্ষেত্রে সকলের সচেতন হওয়ার বিষয়টিও গুরত্বারোপ করেন।
সিভিল সার্জন এ এফ এম মুশিউর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, পরিবেশ দূষণের সাথে জনস্বাস্থ্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তিনি প্লাস্টিক বর্জ্যের সাথে ই-বর্জ্যের উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধির বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাজারে পূর্বে সবাই পাটের ব্যাগ/চটের ব্যাগ নিয়ে যেতো, কিন্তু বর্তমানে সবাই বাজার করতে কোন ব্যাগ ছাড়াই যায় এবং একাধিক পলিথিন নিয়ে বাসায় ফিরে। যে অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৪০০ মিলিয়ন মেট্রিক টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে প্রায় ১১ মিলিয়ন মেট্রিক টন বর্জ্যই সমুদ্রে পতিত হচ্ছে, যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০৪০ সাল নাগাদ ২৩ থেকে ৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন হতে পারে। বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়। ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা বা মাইক্রোবিড, ন্যানো প্লাস্টিক খাদ্য চক্রের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন খাদ্যের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন দূরারোগ্য ব্যধি সৃষ্ট করছে। তিনি প্লাষ্টিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে মাল্টি সেক্টরাল একশন প্ল্যান ২০২১-২০৩০ এর বিষয়টি তুলে ধরেন।