A Top Ads

নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজঃ বিশ্ব ক্যান্সার দিবস-২০২৫ উপলক্ষে “বাংলাদেশ ক্যান্সার রোগের বিস্তার প্রতিরোধ ও আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি” শীর্ষক সেমিনার প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতাল প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিএসএমএমইউ, আইসিএমএইচ ও নারায়ণগঞ্জ’ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট খাঁনপুর জেনারেল হাসপাতাল’সহ বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার হতে আগত প্রায় ৩০০ জন চিকিৎসকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

    

প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালের সম্মানিত পরিচালকবৃন্দ ও কর্মরত চিকিৎসকবৃন্দের অংশগ্রহণে সেমিনারটি অত্যন্ত প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। দেশ বরেণ্য স্বর্ণপদক প্রাপ্ত, রক্তরোগ ও ব্লাড ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডাঃ এ.বি.এম.ইউনুস (গইইঝ, গচযরষ, ঋঈচঝ-ইঝগগট), বিএসএমএমইউ’র নাক-কান-গলা ও হেড-নেক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডাঃ আবদুস সাত্তার এবং প্রো-অ্যাকটিভ গাইনি এন্ড অবস. ও ফার্টিলিটি সেন্টারের চীফ কনসালটেন্ট ডাঃ কামরুন নাহার হিসেবে নিজ নিজ বক্তব্য উপস্থাপন করেন। আলোচনায় প্রফেসর ডাঃ এ.বি.এম.ইউনুস বলেন, প্রায় ৩০% – ৫০% ক্যান্সার প্রতিরোধযোগ্য। ক্যান্সার রোগ নির্ণয়ের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে চিকিৎসা শুরু করলে রোগীদের ক্যান্সার নির্মূল এর হার চমকপ্রদ এবং আক্রান্ত রোগী বছরের পর বছর সুস্থ্যভাবে জীবন-যাপন করতে সক্ষম হবেন। কিন্তু দুঃখজনক বিষয়টি হচ্ছে বাংলাদেশে যে পরিমাণ ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সে তুলনায় ক্যান্সার সেন্টারের সংখ্যা অপ্রতুল। সমগ্র দেশে এ রোগে আক্রান্ত সকল রোগীর সু-চিকিৎসার জন্য ন্যূনতম ৩০০টি রেডিওথেরাপী ইউনিট প্রয়োজন। কিন্তু দেশে বিদ্যমান রেডিওথেরাপী ইউনিটের সংখ্যা মাত্র ২৫টিরও কম এবং সরকারী হাসপাতালের প্রায় সকল রেডিওলজি যন্ত্রসমূহ অচল রয়েছে বলে সম্প্রতি পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে।

প্রফেসর ডাঃ আবদুস সাত্তার বলেন, বাংলাদেশে নতুন ক্যান্সারের মধ্যে লাখে ৩৭ শতাংশ হেড-নেক ক্যান্সার, বাকী অন্যসব ক্যান্সার ৫৩ শতাংশ, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের অন্যতম খ্যাতিমান গাইনোকোলজিষ্ট প্রফেসর ডাঃ লায়লা বানু পারভীন (মাধবী)সহ বিশিষ্ট চিকিৎসকগণ উক্ত সেমিনারে উপস্থিত থেকে তাঁদের মূল্যবান বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন বাংলাদেশে যেভাবে দ্রুত গতিতে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে তা খুবই আশঙ্কাজনক। আমাদের দেশে ক্যান্সারে আক্তান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবার দূরাবস্থা নিয়ে বক্তাগণ দুঃখ প্রকাশ করেন। ডাঃ কামরুন নাহার বলেন, দেশে জরায়ু ও স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীসহ নারীদেও বিভিন্ন ক্যান্সারে আক্রান্তদের বর্তমান দূরাবস্থা ও চিকিৎসায়ান্তে সচেতনতার অভাববের কথা উল্লেখ করে দ্রুত প্রতিরোধসহ সময়োপযোগী চিকিৎসার উপর জোর দেন।

জনকল্যাণের স্বার্থেগত ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে অত্র হাসপাতালে “প্রো-অ্যাকটিভ ক্যান্সার সেন্টার” –এর কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। নানা ধরনের জটিল ক্যান্সার রোগীর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা, সার্জারি, কেমোথেরাপী,ইমিউনোথেরাপী, প্যালেয়েটিভ কেয়ার, পেইন ম্যানেজমেন্ট ইউনিটসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদেও নিয়মিত চিকিৎসা সেবা প্রদানের ব্যবস্থা এই সেন্টারে চালু করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালের মাননীয় বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মোঃ ইউসুফ আলী চৌধুরী বলেন এই মহতী কাজে যুক্ত হতে পেরে তিনিসহ অত্র হাসপাতালের সকল পরিচালকগণ সম্মানিত বোধ করছেন।

“প্রো-অ্যাকটিভ ক্যান্সার সেন্টার” টিকে একটি পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার ইউনিটে রূপদানের জন্য প্রয়োজনীয় রেডিওথেরাপী ইউনিট স্থাপনের কাজও সহসাই শুরু করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। আয়োজিত সেমিনারের সভাপতি ও অত্র হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (ডাঃ) একেএম নাসির উদ্দিন (অব.) বলেন এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে এখন ক্যান্সাররোগী সর্বোচ্চ গতিতে বাড়ছে।

এই রোগ প্রতিরোধে সকল প্রচেষ্টা এখনই ব্যাপকভাবে শুরু করা প্রয়োজন। দ্রুত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধিজনিত কারণে এদেশে ক্যান্সার প্রতিরোধ ও দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণে আগ্রহের ব্যাপারে ব্যাপক জনসম্পৃক্ততা প্রয়োজন। প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালের গৃহীত সময়োপযোগী এই মহতী উদ্যোগ চিকিৎসকদের মানবিক এ কাজে অনুপ্রাণিত করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন সম্মানিত পরিচালক প্রফেসর মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান, জনাব মোঃ আমিনুর রহমান ফিরোজ, আলহাজ্ব ওয়াহিদুল আকবর খান, জনাব আবু নাঈম মোঃ রাফী, ডাঃ আবু বকর সিদ্দিক, জনাব আবু খালেদ মোঃ রায়হান, জনাব মোঃ শাহ আলমসহ অন্যান্য পরিচালকবৃন্দ এবং অত্র হাসপাতালে কর্মরত সিনিয়র কনসালটেন্ট ও চিকিৎসকবৃন্দ।

আগের সংবাদ দেখুনবাবু বাহিনীর তান্ডব!
পরের সংবাদ দেখুনপুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নালিশ