নারায়ণগঞ্জ শহরের ফুটপাত ও সড়কের বিপনীবিতানে শত শত অবৈধ বিদ্যুৎ বাতি জ্বলে। একটি বাতি থেকে দিনে গড়ে ২৫ টাকা আদায় করা হয়। সে হিসাবে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে শহরের প্রভাবশালী একটি চক্র। এই চক্রের সঙ্গে রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী। অন্যদিকে সরাসরি বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে বিদ্যুৎ চুরি করে ব্যবহার করায় সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। আর পকেটভারী হচ্ছে ওই চক্রের সদস্যদের।
যদিও সরকারীভাবে সারাদেশে বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে পুরো দেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জে দোকানপাট ও মার্কেট রাত ৮টার পর বন্ধ রাখাসহ একাধিক নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময় পরে বন্ধ হলেও বৈদ্যুতিক খুটি থেকে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে অবাধে দোকান চালায় সড়কের দুই ধারের বিপনীবিতানগুলো। বিদ্যুৎ জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সকল নির্দেশনা পালনে জেলাব্যাপী নারায়ণগঞ্জ ডিপিডিসির ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। তাদের নাকের ডগায় চলছে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের উৎসব।
সরেজমিনে শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে কয়েক শতাধিক দোকান। গভীর রাত পর্যন্ত দোকানগুলোর আলোতে ঝলমলে থাকে পুরো এলাকা। তবে এখানের বেশিরভাগ বিদ্যুৎ সংযোগই অবৈধ। একই পরিস্থিতি শহরের প্রধান প্রধান সড়কের চারপাশে। শায়েস্তাখান সড়ক, নবাব সিরাজউদ্দোল্লাহ সড়ক ও নবাব সলিমুল্লাহ সড়কগুলো অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের আখড়া।
বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতের ভ্রাম্যমান দোকানগুলোর মালিক ও কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন এক বাতির জন্য দোকানিদের দিতে হয় ২০ থেকে ৩০ টাকা। কিন্তু এই বিল জেলা বিদ্যুৎ বিভাগে নয়, দোকানিদের বিলের টাকা হাতিয়ে নেয় শহরের প্রভাবশালী মহল।
এক দোকানি বলেন, এক বাতির জন্য প্রতিদিন ২০ টাকা দেই একজনরে। শায়েস্তাখান রোডের অন্য এক দোকানি বলেন, আমরা লাইন চালাই, বিদ্যুৎ বিল ২৫ টাকা নিয়ে যায়। বিল দেয় কিনা জানি না।
আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সভাপতি নূর উদ্দিন এ বিষয়ে বলেন, সারাদেশে বিদ্যুতের সংকট চলছে। এ সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রæত ফুটপাতের দোকানে অবৈধ সংযোগগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। অবৈধ সংযোগ দিয়ে একদিকে বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছে, অন্যদিকে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
নারায়ণগঞ্জ ডিপিডিসির (ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি) নির্বাহী প্রকৌশলী (পূর্ব) গোলাম মর্তুজা এ বিষয়ে বলেন, আমরা প্রতি মাসেই নিয়মিত অভিযান করে থাকি। অভিযানে অবৈধ সংযোগ পেলে জরিমানা করে সংযোগ কেটে দেই।
নারায়ণগঞ্জ ডিপিডিসির (ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি) তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী কামাল হোসেন অবৈধ সংযোগের বিষয়ে বলেন, আমরা মাস খানেক পূর্বেও ফুটপাতে ও সড়কের চারপাশে অভিযান করেছি। সড়কের অস্থায়ী হকারদের বৈদ্যুতিক অবৈধ সংযোগ নেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা করেছি। তাদের মধ্যে অনেকে বৈধভাবে মিটার নিতে চায় কিন্তু সিটি করপোরেশন থেকে তাদের ব্যবসায়িক কোন লাইসেন্স নেই। ফলে তাদের আমরা বৈদ্যুতিক মিটার দিতে পারি না। তবে শীগ্রই অভিযান করে অবৈধ সংযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্য্যালয়: ৪র্থ তলা, রুপালী সুপার মার্কেট, চিটাগাংরোড, সিদ্ধিরগঞ্জ।
বার্তা কক্ষ: ইমেইলঃ [email protected] মোবাইলঃ 01711581634, 01921-116126
Powered by Sourav Bhuiyan