নয় বছর হলো আলোচিত এই হত্যাকান্ডের কোন কুল কিনারা হলো না। বিচারের আশায় আমরা পথ চেয়ে বসে আছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের যে আশ^াস দিয়েছিলেন তাও আজও বাস্তবায়ন হয়নি।
বিভিন্ন সময়ে সাহায্য-সহযোগিতার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে সাত হত্যায় নিহত পরিবারের মাঝে নানাভাবে যে আশ্বাস দেয়া হয়েছিলো তাও বাস্তবায়ন হয়নি। এতে করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে আজও দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তারা। এমনটাই বলছিলেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত হত্যা মামলার বাদি নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের লামাপাড়া এলাকা থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। ৩০ এপ্রিল ও ১ মে শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে তাদের মরদেহ।
সে সময় সারা দেশে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। স্বামী হারানোর কথা বলতে গিয়ে গাড়িচালক জাহাঙ্গীরের স্ত্রী নূপুর বলেন, ‘আমরা কিছু চাই না, শুধু চাই রায় যেন দ্রুত কার্যকর হয়। খুনিদের বিচার দেখতে চাই। নিহত বাকি ছয়জনের পরিবারের সদস্যদেরও একই দাবি। নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে উচ্চ আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও রায় কার্যকরের ব্যাপারটি বিলম্ব হওয়ায় সংশয় প্রকাশ করেন মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি। তিনি আদালতের রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান।
নিহত তাজুল ইসলামের পিতা আবুল খায়ের বলেন, আমরা নিম্ন আদালত থেকে আসামিদের ফাঁসির রায়টি দ্রুততম সময়ে পেয়েছি। কিন্তু মামলাটি এখনও উচ্চ আদালতের আপীল বিভাগে আটকে আছে। আমরা বর্তমানে সাত খুন মামলাটি নিয়ে শঙ্কিত ও হতাশ হয়ে পড়েছি। কারণ সাত খুনের আসামি খুবই প্রভাবশালী ও টাকাওয়ালা লোক।
সাত খুন মামলার রায়টি জীবিত থাকতে দেখে যেতে চাই। কারণ আমরা জানতে পেরেছি সাত খুনে নিহত সিরাজুল ইসলাম লিটনের বাবা গত দুদিন আগে মারা গেছেন। তিনি তার ছেলের হত্যার বিচার দেখে যেতে পারলেন না। আমরা সাত খুন মামলার রায় দ্রুত কার্যকর করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোরদাবি জানাই।
নিহত মনিরুল ইসলামের ভাই নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাত নাম্বার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান রিপন বলেন, সাত খুন মামলার রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি। উচ্চ আদালত থেকে সাত খুনের আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দন্ডাদেশসহ যে রায়টি হয়েছে সেই রায়টি যেন সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে বহাল থাকে। আমরা এ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি আমাদের আশ^স্থ করেছেন যে সাত খুন মামলায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, সাত খুন মামলাটি উচ্চ আদালতের আপীল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। হাইকোর্ট ডিভিশনে সাত খুন মামলায় যে সাজাটি বহাল রেখেছেন সেই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ আপীল বিভাগে আপীল করেছেন। আশা করি এ বছরই মামলাটি শেষ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ২৬ জনের ফাঁসি ও ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজার আদেশ হয়। আসামি পক্ষের আপীলের পর হাইকোর্ট বিভাগ নিম্ন আদালতে যেখানে ২৬ জনের ফাঁসির আদেশ ছিল সেখানে হাইকোর্ট ১৫ জনকে ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছেন। মৃত্যুদন্ড ১০ জনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন। তবে মূল আসামিদের মৃত্যুদন্ড বহাল আছে। অন্য আসামিদের সাজা বহালও রেখেছেন।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্য্যালয়: ৪র্থ তলা, রুপালী সুপার মার্কেট, চিটাগাংরোড, সিদ্ধিরগঞ্জ।
বার্তা কক্ষ: ইমেইলঃ [email protected] মোবাইলঃ 01711581634, 01921-116126
Powered by Sourav Bhuiyan