নারায়ণগঞ্জের সাইলোতে(খাদ্য গুদাম) দারোয়ানদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত, পা ও মুখ বেঁধে গতকাল রাতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে ওই খাদ্য গুদামের কয়েক কোটি টাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় ডাকাতদল। রহস্যজনক কারণে কর্তৃপক্ষ থানা পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে কোন অবহিত করেন নি। এতে সরকারি কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হলেও কারো মাথা ব্যাথা নেই এ বিষয়ে। এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন সাইলো কর্তৃপক্ষ।
ঠিকাদার সূত্রে জানাযায়, নারায়ণগঞ্জ সাইলোর মালামাল লোড আনলোডের জন্য ডেনমার্ক থেকে আমদানিকৃত অত্যাধুনিক যন্ত্রাপাতি (বিগেইন) লাগিয়েছেন সরকার। যার মাধ্যমে অতি অল্প সময়ে মালামাল লোড আনলোড করা হয়। গতকাল রাতে নদী পথে অস্ত্রধারি ১৫/২০ জনের একদল ডাকাত এসে সাইলোর দারোয়ান মোতালেব মিয়াকে হাত পা মুখ বাধে। তার এই অবস্থা দেখে ইমাম হাসান নামে আরেক দারোয়ান তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান।
পরে ডাকাতদল অত্যাধুনিক যন্ত্রাংশের রিমোট কন্ট্রোলার, সুইচবক্স, গিয়ারসহ কয়েক কোটি টাকার মূল্যবান মালামাল নিয়ে যান। ঠিকাদাররা আরো জানান, গেল দুই সপ্তাহ আগে সাইলোর পুরো বাউন্ডারির কয়েক কোটি টাকা মূল্যের তারের ক্যাবল চুরি হয়ে যায়। তারও কোন হদিস বের করতে পারেনি সাইলো কতৃপক্ষ। এছাড়াও চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারী নদী পথে একদল ডাকাত ট্রলার দিয়ে এসে সাইলো গেইটের ছোট জেটির প্রবেশ পথ কেটে সাইলোর সব পয়েন্টের দারোয়ানদের হাত, পা, মুখ বেধে ফেলে।
পরে দারোয়ানদের হাত পা মুখ বেধে গানি গোদামে বন্দি করে ডেনমার্ক থেকে আনা মটর ও অন্যান্য মূল্যবান যন্ত্রপাতিসহ কয়েক কোটি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। সাইলোর রক্ষন প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা আমিনুল ইসলাম রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বে থাকলেও তিনি এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। আমিনূল ইসলাম আওয়ামীলীগে একজন প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে পুরো সাইলো এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছেন বলে একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ রয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন এলাকাবাসী জানান, সাইলো থেকে কোটি কোটি টাকা মূল্যের মূল্যবান যন্ত্রপাতি কয়েক দফায় ডাকাতি ঘটনা ঘটলেও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত না করে ধামাচাপা দিয়ে রেখেছেন কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে শক্তিশালী তদন্ত কমিটির মাধ্যমে এসকল ঘটনা খতিয়ে দেখার দাবি জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারায়ণগঞ্জ সাইলোর এক ঠিকাদার জানান, চুরি হয়ে যাওয়া ক্যাবল কাভারভ্যান দিয়ে সাইলোতে এনে মূল ফটক বন্ধ করে তারের ক্যাবল লাগিয়েছেন সাইলোর কর্মকর্তারা। এ ক্যাবরের খরচ বিভিন্ন খাতে খরচ দেখানো হবে বিল ভাউচারের মাধ্যমে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন,কাগজে কলমে এসব মালামাল থাকলেও বাস্তবে তার কোন অবস্থান নেই সাইলোতে।
সাইলোর একজন ঠিকাদার জানান, কয়েকদিন পর পরই এই সাইলোতে চুরি, ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসকল ঘটনায় থানায় কোন সাধারণ ডায়েরী বা অভিযোগ কোন কিছুই করেন না কর্তৃপক্ষ। চুরি, ডাকাতি হয়ে যাওয়া এসকল মালামাল অন্যখাতের ভাউচার দেখিয়ে পুরণ করে নেন সাইলোর সুপারসহ অন্যান্য কর্মকর্তরা।
দায়োরান মোতালেব মিয়া ও ইমাম হাসান বলেন, আমরা ডিউটিতে ছিলাম। হঠাৎ করেই হাত, পা, মুখ বেধে সব লুট করে নিয়ে যায়। মোতালেবকে বাধতে দেখে ইমাম হাসান দৌড়ে পালিয়ে যায়।
নারায়ণগঞ্জ সাইলো সুপার নাজিম উদ্দিন জানান, এটা তেমন বড় কোন ঘটনা না ছোট খাটো ঘটনা। মূল্যবান যন্ত্রাংশ ডাকাতি হয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে কোটি টাকা মূল্যের মূল্যবান যন্ত্রাংশ নয়। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করি আমরা।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত্র করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাবÑ১১ এর অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা জানান, এ বিষয়ে আমরা এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে ঘটনার সাথে কারা জড়িত তাদের বিষয়ে আমরা কাজ করছি।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্য্যালয়: ৪র্থ তলা, রুপালী সুপার মার্কেট, চিটাগাংরোড, সিদ্ধিরগঞ্জ।
বার্তা কক্ষ: ইমেইলঃ [email protected] মোবাইলঃ 01711581634, 01921-116126
Powered by Sourav Bhuiyan