নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ: নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের এক নাম্বার ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলাম নামে এক ব্যক্তি নদীর জায়গা দখল করে বহুতল দুটি ভবন নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পাইনাদী এলাকায় কংসনদীর উপর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বহুতল ভবনে বসবাস এলাকায় আলোচনা সমালোর ঝড় উঠেছে।
সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পাইনাদি তেরা মার্কেট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও নামধারী আওয়ামীলীগ নেতা আনোয়ার ইসলাম ওরফে চুনা আনোয়ার কংস নদীর একাংশ বালু দিয়ে ভরাট করে দু’পাশে দুটি বহুতল ভবন নির্মাণ করে দীর্ঘদিন যাবৎ বসবাস করে আসছেন। নদীর উপর দিয়ে অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করে দুই ভবনে যাতায়াত করেন বসবাসকারীরা। কংস নদীটি একশ ফুট চওড়া থাকলেও তার দুই ভবনের মাঝখানে দশ থেকে বারো ফুট নদীর জায়গা রয়েছে। বাকি নদীর জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণ করে দিব্যি বসবাস করছেন তিনি। এতে ওই নদীতে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় ওই এলাকায়। দিনের পর দিন পানি জমে থাকায় মশামাছির উপদ্রপসহ নানা অসুখ বিসুখে পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পাইনাদী এলাকার বাসিন্দা আরাফাত রহমান জানান, কংসনদীটি এক’শ ফুট চওড়া ছিলো। নদীতে এখানকার বাসিন্দারা পাট ভিজাইতেন। এই পথ দিয়ে ধান-পাট বোঝাই নৌকা চলাচল করত। কী সুন্দর পানি ছিলো নদীর টলটল করত। দখলের কারনে নদীটি এখন মৃত। নদীটি পুনরায় খনন ও পুনরুদ্ধারের দাবি জানান তিনি।
আব্বাস আলী নামে এক বাসিন্দা জানান, নদীর এক দিকে বিশ ফুট চওড়া আর অন্যদিকে দশ ফুট ও তার কোথাও কোথাও তার থেকে কম কিভাবে এমনটা হয় বুঝে আসে না। কাউন্সিলর হওয়ায় এমন অবস্থা বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, নদীটি এখন খালে পরিনত হয়েছে। পানি চলাচল না করায় মশামাছির উপদ্রব বেড়েগেছে আমাদের এলাকায় তাছাড়া বাসাবাড়ির ময়লা আবর্জনা খালে পড়ায় দূর্গন্ধে অতিষ্ট হয়ে পড়েছি আমরা। এতে ডেঙ্গুর উপদ্রপ বেড়ে যেতে পারে আমাদের এলাকায়। করিম মিয়া নামে এক বাসিন্দা বলেন, এই যে রাস্তা দেখতেছেন ১৩০ ফুট, এর কাছাকাছি ছিলো নদীটি। নদীর দুই পাশে যে বাড়িঘর হয়েছে সব নদীর জায়গায় হয়েছে।
একই এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল মিয়া জানান, এ নদীর পানি দিয়ে গোসল করার পাশাপাশি রান্নাবান্নাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হতো। আর এখন নদীর পাশ দিয়ে যেতে হলে নাকে রুমাল দিয়ে যেতে হয়। দখলদাররা এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় প্রশাসনের সাথে ম্যানেজ করেই টিকিয়ে রেখেছে তার দখলদারিত্ব। ফলে কেউ তাদের ভয়ে মুখ মুখছেন না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এক নাম্বার ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলাম জানান, নদী দখল করে আমি বাড়ি নির্মাণ করিনি। সরকারি ভাবে মাপের পর নদীর জায়গা ছেড়ে আমি ভবন করেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াসিন মিয়া জানান, আনোয়ার হোসেন ওরফে চুনা আনোয়ার নামে কোন ব্যক্তি আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কোন কমিটিতে নেই। তবে সে দলীয় কর্মসূচীতে থাকেন বেশীরভাগ সময়ে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ জানান, যারা কংস নদী দখল করে ভবন নির্মান করে দখল করে রেখেছে তারা যতই শক্তিশালী হউক না কেন তাদেরকে উচ্ছেদ করে নদী উদ্ধার করা হবে। আনোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তি নদীর জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণের বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। প্রমাণ পেলে তাকে খুব শিগগিরই উচ্ছেদ করা হবে।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্য্যালয়: ৪র্থ তলা, রুপালী সুপার মার্কেট, চিটাগাংরোড, সিদ্ধিরগঞ্জ।
বার্তা কক্ষ: ইমেইলঃ [email protected] মোবাইলঃ 01711581634, 01921-116126
Powered by Sourav Bhuiyan