নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ
পুরাণ ঢাকার আদালত চত্বর থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন “আনসার আল ইসলাম” এর জঙ্গী সদস্য ছিনিয়ে নেয়া চক্রের প্রধান সমন্বয়ক ও তার সহযোগীকে গ্রেফতারের পর শনিবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ডিএমপি’র কোতয়ালী থানায় সন্ত্রাস ও জঙ্গী বিরোধী আইনে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন “আনসার আল ইসলাম” এর জঙ্গী সদস্য ছিনিয়ে নেয়া চক্রের প্রধান সমন্বয়ক ফাতেমা তাসনীম শিখা (৩১) ও তার সহযোগী হুসনা আক্তার হুসনা (২২)’কে গ্রেফতার করেছে।
২০২২ সালের ২০ নভেম্বর সিএমএম কোর্ট ভবনের সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনালে হাজিরা প্রদান শেষে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসার আল ইসলাম এর সদস্য আসামী মইনুল হাসান শামিম ওরফে সিফাত (২৪), আবু সিদ্দিক সোহেল (৩৪), আরাফাত রহমান (২৪) এবং আব্দুস সবুর’কে সিএমএম কোর্ট এর হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার সময় সিএমএম কোর্ট এর মূল ফটক এর সামনে পৌঁছামাত্র নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসার আল ইসলাম এর অজ্ঞাতনামা সদস্যগণ উক্ত চার জন আসামীকে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য কর্তব্যরত পুলিশের উপর হামলা করে এবং একপর্যায়ে আসামী মইনুল হাসান শামিম এবং আসামী আবু সিদ্দিক সোহেলকে ছিনিয়ে নিয়ে মোটর সাইকেলযোগে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় পলাতক জঙ্গী আবু সিদ্দিক সোহেল এর স্ত্রী ফাতেমা তাসনীম শিখা পলাতক আসামীরা এবং হামলাকারী সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ফাতেমা তাসনীম শিখা ২০১৪ সালে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেন। এক পর্যায়ে তার ভাই মোজ্জাম্মেল হোসেন সাইমন এর মাধ্যমে সে আনসার আল ইসলামের আদর্শে দীক্ষিত হয় এবং পরবর্তীতে সায়মনের মাধ্যমে আবু সিদ্দীক সোহেলের সাথে তার বিয়ে হয়।
উল্লেখ্য, সোহেল আনসার আল ইসলামের সামরিক (আসকারি) শাখার সদস্য ছিলেন। সোহেলের সাথে বিয়ের পর থেকে সে আরোও গভীরভাবে সংগঠনের সাথে জড়িয়ে পড়ে। ২০১৭ সালে মুক্তমনা ব্লগার অভিজিত রায়, দিপন ও নীলাদ্রি নিলয় হত্যা মামলার আসামী হিসাবে আবু সিদ্দিক সোহেল গ্রেফতার হয়। গ্রেফতারের পর থেকে বিভিন্ন এনক্রিপ্টেড অ্যাপসের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃত শিখা কারাবন্দী সোহল’সহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের সাথে যোগাযোগ বজায় রেখে সংগঠনের কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণ শুরু করে।
জঙ্গী ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা সম্পর্কে গ্রেফতারকৃতরা আরও জানায়, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন “আনসার আল ইসলাম” এর শীর্ষ নেতৃবৃন্দের পরিকল্পনা ও নির্দেশনা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতের কার্যক্রম শেষে পুলিশের উপর আক্রমণ করে জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করা হয়। ফাতেমা তাসনীম শিখা এই কার্যক্রমে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে। পরিচয় গোপন করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন “আনসার আল ইসলাম” এর সদস্যরা জঙ্গী ছিনতাইয়ের পুরো পরিকল্পনা, প্রস্তুতি ও সমন্বয় করার উদ্দেশ্যে ঢাকা এবং এর পাশ^বতী জেলায় একাধিক আনসার হাউস ভাড়া নেয়। সেখানে আনসার আল ইসলামের শীর্ষ এবং সামরিক শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আয়মান এবং শিখা’সহ অজ্ঞাতনামা আনসার আল ইসলাম সদস্যদের নিয়ে নিয়মিত সভা করত।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার প্রায় ৬ মাস আগে থেকে জঙ্গী ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করা হয়। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার হতে সিজেএম কোর্টে হাজিরা দেয়ার সময় এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয় এবং পরিকল্পনার সমন্বয়ক হিসাবে শিখাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। পরবর্তীতে ঘটনার দিন সে সিএমএম কোর্ট এলাকায় এসে কৌশলে তার বাবার কাছ থেকে বিছিন্ন হয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় নেতৃত্ব দেয়া মশিউর রহমান আয়মান’সহ আনসার আল ইসলামের সদস্যের সাথে যোগাযোগ করে পুরো পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্য্যালয়: ৪র্থ তলা, রুপালী সুপার মার্কেট, চিটাগাংরোড, সিদ্ধিরগঞ্জ।
বার্তা কক্ষ: ইমেইলঃ [email protected] মোবাইলঃ 01711581634, 01921-116126
Powered by Sourav Bhuiyan