
নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজঃ নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জের তারাবো পৌর ভুমি অফিস যেন ঘুষের হাট। ভূমি অফিসে কাজের ধরন ও জমির পরিমাণ অনুযায়ী ঘুষের হার নির্ধারণ করেন ওই ভুমি অফিসের কর্মকর্তারা। ভুমি অফিসকে দালালমুক্ত রাখতে সিসি ক্যামেরা ও বিভিন্ন প্রকার পদক্ষেপ নিলেও ওমেদাররাই অফিস নিয়ন্ত্রণ করেন। ঘুষসহ সকল অবৈধ লেনদেনের পরিমাণ নির্ধারণ করে দেন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা নিজেই।
সরেজমিনে মঙ্গলবার রুপগঞ্জের তারাবো পৌর ভুমি অফিসের দুপুর বারোটায় গিয়ে দেখা যায়, ভুমি সহকারি কর্মকর্তা আব্দুল কদির ও ভূমি উপ-সহকারি কর্মকর্তা বিপুল বাবুর চেয়ার ফাঁকা।
তারা উভয়ে অফিস রেখে বাহিরে অবস্থান করছে। আর তাদের অফিসে বসে দেন দরবারে ব্যস্ত সময় পার করছেন অফিস সহকারি ও ওমেদাররা। কথা হয় নোয়াপাড়া থেকে আসা রমিজ মিয়ার সাথে তিনি বলেন, দশ শতাংশ জমির খারিজ করতে এই অফিসে আসছিলাম। কাদির ভাই আমার কাছে মোট অংকের টাকা টাকা চেয়েছে। আমি বলেছি সরকারি নির্ধারিত ফি বাদে আর সামান্য কিছু টাকা আপনি নেন। তিনি রাজি হয়নি। তাই জমিটির খারিজ করাতে পারিনি।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তারাবো পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল কাদির থেকে শুরু করে অফিসের পিয়ন, ঘুষ-দুর্নীতির ‘রসের হাঁড়িতে’ মজে অনিয়মকে রূপ দিয়েছেন নিয়মে! আর এতে করে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ভুক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করলেও কোন ফল হয় না।
স্থানীয় সূত্র জানায়, তারাব পৌর ভুমি অফিসে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল কাদির টাকা ছাড়া কোনো কাজ করেন না। নামজারি (নাম খারিজ), ডিসিআর ও দাখিলার জন্য তাকে আলাদা আলাদা টাকা দিতে হয়। কখনো টাকা দিলেও জুটে না নামজারি। খাজনার দাখিলার জন্য (ভূমি উন্নয়ন করের রসিদ) সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়েও অতিরিক্ত টাক আদায় করলেও আবার রশিদ দেয়া হয় সরকারি হিসাবেই।
এসবের মাধ্যমে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ভূমি সহকারী কর্মকর্তা। দৌরাত্ম বেড়েছে দালাল সিন্ডিকেটেরও।
আমান উল্লাহ নামে মইকুলি এলকার বাসিন্দা জানান, আব্দুল কাদিরের ঘুষ বাণিজ্য’ অনিয়ম’ দুর্নীতি ও নিজের নিয়োজিত দালাল-কর্মচারী সিন্ডিকেটের উৎপাতে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। গোটা ভূমি অফিস হয়ে উঠেছে অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়া। এক্ষেত্রে ভয়ভীতিরও বালাই নেই।
নিজের ইচ্ছামাফিক অফিসে-যাওয়া আসা করেন তারাবো ভুমি অফিসের সহকারি ভুমি কর্মকর্তা। এমন অফিযোগ করেন স্থানীয়রা। অধিকাংশ সময়েই অফিস করেন না, মনের ইচ্ছে মতো চলেন, ভুমি সহকারি কর্মকর্তা আব্দুল কাদির ও বিপুল মিয়া।
তারাবো পৌর ভুমি অফিসের ভুমি সহকারি কর্মকর্তা আব্দুল কাদির ও উপ-সহকারি কর্মকর্তা বিপুল বাবুকে কয়েকবার কল করা হলে ফোনটি রিসিভ করেন নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রুপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান হাবিব রাসেল তার মোঠোফোনে নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজকে জানান, বরাব ভুমি অফিসের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।