
নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ
দীর্ঘদিন যাবত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি একটি মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে উঠেছে। সংঘবদ্ধ এই ডাকাত চক্র মহাসড়কের সাধারণ যাত্রী ও বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের ডাকাতি করে সর্বশান্ত করছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, যাত্রীদের গুরতর আঘাত’সহ হত্যার মত ঘটনাও ঘটাচ্ছে। বিভিন্ন সময় এসকল ডাকাতির ঘটনা স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদ মাধ্যম সহ সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আকারে প্রকাশিত হয়েছে যা এই মহাসড়কের সাধারণ যাত্রী ও চালকদের মনে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
র্যাব-১১ এই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ডাকাতি নিরসনে ও ডাকাতির সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ মার্চ রাত ১১টায় মহাসড়ক ডাকাত চক্রের দলনেতা’সহ ৮ সক্রিয় সদস্যকে বিভিন্ন ধরণের দেশীয় অস্ত্র’সহ হাতে-নাতে আটক করতে সক্ষম হয়। শনিবার (১৮ মার্চ) র্যাব-১১ এর কোম্পানী কমান্ডার উপ-পরিচালক স্কোয়াড্রন লীডার এ কে এম মুনিরুল আলম স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত ডাকাত দলের সদস্যরা হল মো. সুজন (২০), মো. রাসেল (২৭), মো. আলাউদ্দিন (১৯), মো. বাদশা হোসেন দিপু (২৩), মো. সাব্বির (১৯), মো. হাবিবুর রহমান (১৯), মো. মিন্টু (২৩) ও মো. সিয়াম (১৯)। গ্রেফতারকালে তাদের কাছ থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত ১টি রামদা, ৩টি চাইনিজ কুড়াল, ১টি স্টীলের তৈরি চাপাতি, ১টি বড় ছোরা, ১টি হাতুড়ি এবং ১টি শাবল উদ্ধার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, ডাকাতি নিরসনে র্যাব-১১ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় নিয়মিত অভিযান ও টহল কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এবং বিগত এক বছরে ডাকাতির বিরুদ্ধে ৩৫টি অভিযান পরিচালনা করেছে এবং মোট ১১৪ জন ডাকাতকে বিপুল পরিমান অস্ত্রসস্ত্র’সহ গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে। এই ধারাবাহিক অভিযানের অংশ স্বরুপ র্যাব-১১ গত ১৬ মার্চ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সাদা পোষাকে এবং পোষাক পরিহিত অবস্থায় দুটি দলে বিভক্ত হয়ে টহল কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে।
টহল পরিচালনা কালীন কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে আসার পথে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানাধীন চর বাউসিয়া এলাকায় পৌছালে র্যাব-১১ এর আভিযানিক দলটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখি নির্জন অন্ধকারাছন্ন জায়গায় যানযটে পড়ে। এ সময় সাধারণ যাত্রীবাহি গাড়ী মনে করে ১০/১২ জন দুর্ধর্ষ ডাকাত দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ডাকাতির উদ্দেশ্যে সাদা পোষাকে থাকা র্যাব সদস্যদের গাড়ীটিকে ঘেরাও করে। তখন র্যাব সদস্যরা গাড়ী থেকে নেমে ধাওয়া করে কৌশলে এই ডাকাত দলের দলনেতা সহ ৮ জন সদস্যকে বিভিন্ন ধরণের দেশীয় অস্ত্রসহ হাতে-নাতে আটক করতে সক্ষম হয়। এসময় আরো ৩/৪ অজ্ঞাতনামা ডাকাত দৌড়ে পালিয়ে যায়।
র্যাব আরো জানায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র এবং তাদের দলের সদস্য সংখ্যা ১২-১৫ জন। গ্রেফতারকৃত ডাকাত সর্দার মো. সুজন ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারের যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র ডাকাতি করে আসছিল। গত দুই বছরে তারা এই মহাসড়কে প্রায় ৫০ টির অধিক ডাকাতি করেছে বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করে।