
নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজঃ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত যেন চাঁদা আদায়ের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হওয়ার পর কয়েকমাস পরিবহন চাঁদা বন্ধ থাকলেও ফেল চাঁদাবাজরা নতুন করে মাথাচারা দিয়ে উঠছে। তবে চাঁদাবাজির কৌশল পাল্টে নতুন ভাবে চাঁদা আদায় করছেন তারা। তিন পয়েন্টে প্রতিমাসে দুই কোটি টাকা চাঁদা উত্তোলন করছেন চাঁদাবাজবাহিনীর সদস্যরা। স্থানীয় প্রশাসন অনেকটাই নিস্কৃত থাকায় এসকল চাঁদাবাজরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছেন। তবে প্রশাসন বলছেন, পরিবহন চাঁদাবাজদের কোনভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর ঢাকা-চট্টগ্রামের মহাসড়কে পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে যায়। এসময় যত্রতত্র বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, পিক-আপ, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যাত্রী ও মাল বোঝাই যানবাহন থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে যায়। এতে ওইসব যানবাহনের চালকদের মাঝে স্বস্তি ফিরলেও সম্প্রতি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, শিমড়াইল মোড়, কাঁচপুর, মদনপুর, মোগড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড ও মেঘনা সেতু এলাকায় নির্বিঘেœ পরিবহন থেকে চাঁদা তুলছেন একটি চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট।
সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে থ্রি হুইলার, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, নসিমন, করিমন চলাচল বন্ধ ঘোষণার পরও মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এসব অবৈধ যান। সরকারি সিদ্ধান্তের নয় বছর পেরিয়ে গেলেও মহাসড়কগুলোয় এসব বিপজ্জনক যানবাহন নির্বিঘ্নে চলছে। ফলে সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনা ও মৃত্যু উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। সড়ক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলেছেন, স্থানীয় প্রশাসন ও হাইওয়ে পুলিশের নির্লিপ্ততা এবং কার্যকর তদারকির অভাবে মহাসড়কে থ্রি হুইলার বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যাচ্ছে না। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা।
নিয়মিত চাঁদা দিয়েই সড়কে চলছে এসব ঝুঁকিপূর্ণ যান। ফলে বিভিন্ন উদ্যোগের পরও সড়ক দুর্ঘটনা কমানো যাচ্ছে না। মহাসড়কের দুই লেনেই উল্টো পথে চলছে তিন চাকার যান। এ কারণে বেশির ভাগ সময়েই বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরিসহ বড় গাড়িগুলোর সঙ্গে ধাক্কা লেগে প্রাণ দিতে হচ্ছে চালকসহ যাত্রীদের। সাইনবোর্ড, চিটাগং রোড, মৌচাক, সানারপাড়, কাঁচপুর, মদনপুর, কেওঢালা, শিমড়াইল, মোগড়াপাড়, মেঘনা পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে মহাসড়কের ওপরেই গড়ে উঠেছে অটোরিকশার স্ট্যান্ড। ফলে প্রতিনিয়তই মহাসড়কে যানজট লেগে থাকে। প্রশ্ন উঠেছে- হাইওয়ে পুলিশকে ম্যানেজ না করলে এসব গাড়ি মহাসড়কে চলাচল করে কীভাবে? কিছু দালালচক্রের টোকেনের সহযোগিতায় মহাসড়কে চলছে এসব নিষিদ্ধ সিএনজি ও অটোরিকশা।
চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি মহাসড়কের কাঁচপুর সেতুর পশ্চিমপাশে যাত্রীবাহী বাস ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশার যাত্রী নারী-শিশুসহ তিনজন নিহত হন। মহাসড়কে চলাচলরত থ্রিহুইলারকে সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ চিহ্নিত করে আইন প্রণয়নের মধ্য দিয়ে ২০১৬ সালের আগস্ট মাস থেকে স্থায়ীভাবে মহাসড়কে থ্রিহুইলার চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়।ওই নিষেধাজ্ঞায় প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে প্রায় আট বছর মহাসড়কে থ্রিহুইলার চলাচল অনেকটাই বন্ধ ছিল। মহাসড়কে নিষিদ্ধ ওইসব যানবাহন আটক, জব্দ ও জরিমানা করা হাইওয়ে পুলিশের নিত্যকর্মের অংশে পরিণত হয়। পুলিশের ভয়ে রিকশাচালকরাও মহাসড়কে কম উঠতেন।
আড়াইহাজার এলাকার বাসিন্দা এক সময়ের সিএনজি চালক মিজানুর রহমান মিজান ও হাসমত আলী নামে দুই ব্যক্তি মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচলের জন্য প্রতি অটোরিকশা থেকে এক হাজার টাকা করে চাঁদা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এই টাকার ভাগ হাইওয়ে পুলিশও পায়। মিজান ওরফে সিএনজি মিজান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আমলে দলের নাম ভাঙিয়ে এসব চাঁদা উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি ভোল পাল্টে বিএনপির সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছেন বলে দাবি করে সচেতন মহল। তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা। হাইওয়ে পুলিশের নামে চাঁদা আদায়কারী মিজানুর রহমান মিজানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি জাতীয়তাবাদী রিকশা-মোটরচালক দলের নারায়ণগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক।’ দীর্ঘদিন যাবৎ সিএনজি থেকে কিভাবে হাইওয়ে পুলিশের নামে টাকা আদায় করছেন- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি চাঁদা আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার কারেন।
সরেজমিনে মঙ্গলবার মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় গিয়ে দেখাযায়, মহাসড়কের একাংশ দখল করে যত্রতত্র ভাবে বাসস্ট্যান্ড বানিয়ে যাত্রী উঠানামা করাচ্ছেন। এতে ওই এলাকায় প্রতিদিন মহাসড়কে যানজট লেগেই থাকে। কথা হয় ঠিকানা পরিবহনের সুপারভাইজার আলমাছ মিয়ার সাথে তিনি বলেন, সাইনবোর্ড এলাকা থেকে সাভার পর্যন্ত প্রতিদিন একশত সত্তরটি বাস চলাচল করে এই সড়কে। প্রতিটি পরিবহন থেকে প্রতিদিন এগারশত টাকা করে চাঁদা (জিপি) উত্তোলন করা হয়। এসকল চাঁদা বাসের মালিকদের কাছ থেকে নেওয়া হয়। অনাবিল পরিবহনের দায়িত্বে থাকা লাইনম্যান সোহরাব হোসেন জানান, সাইনবোর্ড থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রতিদিন সত্তর থেকে আশিটি গাড়ি চলাচল করে এই রাস্তায়। আমাদের পরিবহন থেকে রাস্তার খরচ বাবদ সাতশত টাকা চাঁদা (জিপি) আদায় করা হয়।
আমাদের পরিবহনের দেখভাল করেন সোলায়মান সাহেব। তিনিই সকল কিছুই নিয়ন্ত্রণ করেন। লাব্বাইক পরিবহনের চালক শুক্কুর আলী জানান, সাইনবোর্ড এলাকা থেকে ঢাকার সাভার পর্যন্ত প্রতিদিন চল্লিশ থেকে পঞ্চাশটি গাড়ি চলাচল করে। এসকল পরিবহন থেকে প্রতিদিন সাতশত টাকা করে চাঁদা (জিপি) আদায় করা হয়। আমাদের পরিবহনের দায়িত্বে রয়েছেন হাসান সাহেব। শিমড়াইল মোড় এলাকায় একই দৃশ্য চোখে পড়ে। মহাসড়কের মাঝে গাড়ি পার্কিং করে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এসকল পরিবহন চলাচল করলেও কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। স্থানীয় প্রশাসন এসকল পরিবহন মালিকের বিরুদ্ধে কোনরকম আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনই করছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। কথা হয় মনজিন পরিবহনের গাড়ির হেলপার আক্কাস আলীর সাথে তার কাছে জানতে চাওয়া হয় কিভাবে আপনাদের পরিবহন পরিচালনা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের পরিবহনের দেখভাল করেন সোলাইমান নামে এক মালিক সমিতির নেতা। তিনি বলেন, আব্দুল্লাহপুর কামারপাড়া এলাকায় প্রতিদিন প্রত্যেক পরিবহন থেকে এক হাজার আটশত ষাট টাকা, শিমড়াইল মোড় বাসস্ট্যান্ড থেকে সত্তর টাকা ও একই স্থানের বালুর মাঠ এলাকায় গাড়ি পার্কিং এর জন্য ত্রিশ টাকা ও গুলিস্তান এলাকায় নব্বই টাকা চাঁদা দিতে হয় এতে আমাদের দ্ইু হাজারের বেশি টাকা চাঁদা গুনতে হয় প্রতিদিন। নীলাচল পরিবহনের এক দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি জানান, আমাদের পরিবহনটি চিটাগাংরোড থেকে মানিকগঞ্জ পাটুরিয়া পর্যন্ত প্রতিদিন একশত বিশটি গাড়ি চলাচল করে এসকল গাড়ি থেকে জিপি বাবদ এক হাজার ছয়শত টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। এই পরিবহনের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন আফতাব উদ্দিন মাসুদ নামে এক ব্যক্তি। তিনি ঢাকার গুলশানে বসেন।
শিমড়াইল মোড় থেকে যাত্রাবাড়ি পর্যন্ত রোড পারমিট ছাড়া লক্কর ঝক্কর লেগুনা পরিচালনা করছেন এসড়কে। এসকল লেগুনার দরজা জানালা কোনটাই ঠিক নেই।
নেই কোন কাগজপত্র। নেই কোন চালকের প্রশিক্ষন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স। কথা হয় লেগুনা চালক সুমন মিয়ার সাথে তিনি জানান, যাত্রাবাড়ি এলাকায় অনিক, ইমরান ও শাকিল নামে তিন ব্যক্তি আমাদের কাছ থেকে প্রতিদিন সত্তর টাকা করে চাঁদা আদায় করে থাকেন ও শিমড়াইল এলাকায় পরশ মিয়া এক ব্যক্তি প্রতিদিন ত্রিশ টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করেন। এছাড়া প্রতি মাসে শিমড়াইল থেকে এক হাজার ও যাত্রাবাড়ি থেকে এক হাজার টাকা করে হাইওয়ে পুলিশের নামে টাকা উত্তোলন করেন পরশ মিয়া। কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে একই দৃশ্য চোখে পড়ে। কাঁচপুর থেকে গাউছিয়া পর্যন্ত প্রায় শতাধিক লেগুনা রোড পারমিট ছাড়াই দীর্ঘদিন যাবৎ চলাচল করছে। কিভাবে এসকল লেগুনা মহাসড়কে চলাচল করছে জানতে চাইলে এক লেগুনা চালক বলেন, আমরা গত আওয়ামীলীগের আমলে আওয়ামীলীগ নেতা ও হাইওয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করেই এসকল লেগুনা পরিচালনা করেছি।
আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা সেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন সালুর নিয়ন্ত্রণে এসকল লেগুনা পরিচালনা হচ্ছে। তবে নারায়ণগঞ্জ জেলা সেচছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন সালু কোন চাঁদাবাজির সাথে জড়িত নয় বলে দাবি করেন তিনি। আলোচিত সাত হত্যা মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেনের সম্রাজ্য দখল করে নিয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও চার নাম্বার ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী মুন্সী। তিনি নূর হোসেনের ট্রাক টার্মিনাল দখল করে তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছেন। তবে আইয়ুব আলী মুন্সী কালের কন্ঠকে জানান, শ্রমিক ও মালিকদের কল্যাণের স্বার্থে কাজ করছি।
এখানে নাইটগার্ড ও অন্যান্য শ্রমিকদের বেতন ছাড়া কোন চাঁদার টাকা উত্তোলন করা হয় না। এদিকে হোমনা, সাচার, কসবা, কচুয়াসহ বিভিন্ন পরিবহন থেকে প্রতিদিন একশো টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করছেন পরিবহন চাঁদাবাজ হেলাল মিয়া।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চালক জানান, শিমড়াইল মোড় থেকে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় চলাচল করছে নাফ ও নাগরিক নামে দুটি পরিবহন। এছাড়া চিটাগাংরোড থেকে গাউছিয়া পর্যন্ত চলছে শ্রমিক পরিবহন, বেকার পরিবহন ও গ্রীন বাংলা পরিবহন চলাচল করলেও তাদের কোন বৈধ কাগজপত্র ও রোড পারমিট নেই। পুলিশকে ম্যানেজ করেই এসকল পরিবহন পরিচালনা করছেন একটি অসাধু ব্যবসায়ী চক্র। নাফ পরিবহনের দেখভাল করছেন মাহফুজ হোসেন নামে এক ব্যক্তি। তার কোন পরিবহন না থাকলেও এক পুলিশ কর্মকর্তার দোহাই দিয়ে প্রতিদিন ওই সকল পরিবহন থেকে মাসে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা জিপির নামে চাঁদা আদায় করে থাকেন। তবে মাহফুজ মিয়ার দাবি তিনি কোন চাঁদাবাজির সাথে জড়িত নন।
নিউ বেকার পরিবহনের চালক রাজিব মিয়া জানান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ও পূনর্বাসন সোসাইটির কেন্দ্রীয় যুব কমান্ডের সভাপতি শফি আলম চৌধুরী সাগর আওয়ামীলীগের আমলে বিভিন্ন পরিবহন থেকে চাঁদা উত্তোলন করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর স্থানীয় বিএনপি নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে আগের মতোই সাগর চাঁদাবাজি শুরু করেন। আমরা টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমাদেরকে মেরে নগদ টাকা মোবাইল ফোনসহ গাড়ির কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় শফি আলম সাগর চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ।
একাধিক পরিবহন চালক জানান, গত পাঁচ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতন হওয়ার পর দুই তিন মাস চাঁদা নেওয়া বন্ধ থাকলেও গত কয়েকমাস যাবৎ চাঁদার ধরণ বদলে জিপি আদায়ের নামে চাঁদা উত্তোলন শুরু হয়েছে। আগের চেয়ে কোথায়ও দ্বিগুণ কোথায়ও তিনগুণ হারে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। আমরা চাঁদাবাজদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। জানি না এই চাঁদার শেষ হবে কোথায়।
লেগুনা পরিবহনের যাত্রী আবুল কাসেম জানান, প্রতিদিন যাত্রাবাড়িতে অফিস যেতে গাড়িটিতে চড়তে হয়। এ গাড়িগুলো কোনটির স্টেয়ারিং ছাড়া বাকি সব ভাঙ্গাচোরা। খুলে পড়ে যাচ্ছে লেগুনার গেইট ও অন্যান্য অংশ। এসকল পরিবহনের রোট পারমিট না থাকলেও কিভাবে মহাসড়কে চলাচল করছে এ নিয়ে তিনি সংষয় প্রকাশ করেন।
গ্রীণ লাইন পরিবহনের চালক আকরাম উদ্দিন জানান, ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ের সাইনবোর্ড হয়ে মোগড়াপাড়া মেঘনা পর্যন্ত যখন যাই তখন বেশ ভয়ে থাকি। এখানে বেশিরভাগ গাড়ির ফিটনেস নেই। গাড়িগুলো লক্কর ঝক্কর তাই সাবধানে চলাচল করি। কখন এসকল গাড়ির সাথে লেগে দূর্ঘটনায় পড়ি সেই ভয়ে থাকি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিআরটিএর সহকারি পরিচালক মাহবুব হোসেন কালের কন্ঠকে জানান, ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, শিমড়াইল মোড় থেকে মেঘনা পর্যন্ যেসকল ফিটনেসবিহীন ও রোড পারমিট বিহীন পরিবহন চলাচল করছে খুব শিগ্রই এসকল পরিবহন মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
গাজীপুর রিজিউনের হাইওয়ে পুলিশ সুপার ড. আক্তারুজ্জামান বসুনিয়া কালের কন্ঠকে জানান, মহাসড়কে যেসকল ফিটনেসবিহীন ও রোডপারমিট ছাড়া পরিবহন চলাচল করছে সেগুলোর বিরুদ্ধে খুব শিগ্রই অভিযানে নামবে হাইওয়ে পুলিশ। যেসকল পরিবহনের বৈধ কাগজপত্র নেই সেই পরিবহনগুলো মহাসড়কে চলতে পারবে না।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে: কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন কালের কন্ঠকে জানান, পরিবহন চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করে চাঁদাবাজদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের চাঁদাবাজদের গ্রেফতারের জন্য আমরা মাঠে কাজ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা কালের কন্ঠকে জানান, বিভিন্ন পরিবহনে চাঁদাবাজদের কোনভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। খুব শিগ্রই এসকল অবৈধ পরিবহনের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও চাঁদাবাজদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।