A Top Ads

নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার অলিপুরা ভুমি অফিসের ঝাঁড়ুদার দিয়ে অফিসের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করেন অলিপুরা ইউনিয়ন ভুমি উপ-সহকারি মোতালিব হোসেন। শফিকুল ইসলাম শফিক ওই কার্যালয়ের ঝাঁড়ুদার হিসেবে কাজ করছেন বলে নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজকে নিশ্চিত করেছেন তিনি।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজে “কোটিপতি দারোয়ান শফিক” শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশিত হলে সংশ্লিষ্ট দফতরের টনক নড়ে। কিভাবে ওই কার্যালয়টি একজন ঝাঁড়ুদারের মাধ্যমে পরিচালিত হয় এ বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন ও তদন্ত চালাচ্ছেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এই সংবাদ প্রকাশের পর ভুমি অফিসের দূর্নীতি অনিয়মের বিষয়টি সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনা সমালোচনা ঝড় উঠে।

শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টায় অলিপুরা ইউনিয়ন ভুমি অফিসের উপ-সহকারি মোতালেব হোসেনকে নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ থেকে ওই কার্যালয়ের শফিকুল ইসলাম শফিকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শফিকুল ইসলাম শফিক অলিপুরা ভুমি অফিসে দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করছেন। সে ওই এলাকার একজন বাসিন্দা। আমি মাত্র কয়েকমাস পূর্বে এই কার্যালয়ে যোগদান করেছি। সে কিভাবে ওই কার্যালয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ চাকরি করছেন আপনি একজন সাংবাদিক হয়ে জানেন না। আমি যতটুকু জানি সে একজন ঝাঁড়ুদার হিসেবে চাকরি নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। একজন ঝাঁড়ুদারকে দিয়ে ইউনিয়ন ভুমি কার্যালয় কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই ভুমি কর্মকর্তা বলেন, আমি এই বিষয়ে আপনার সাথে টেলিফোনে কোন কথা বলতে পারবো না। নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ থেকে বুধবার ভুমি অফিস কর্মকর্তা মোতালেব হোসেনের কাছে প্রথমে জানতে চাওয়া হলে শফিক কোন পদে চাকরি করেন তিনি অকপটে বলেন, দারোয়ান হিসেবে কাজ করছেন।

পরবর্তীতে শুক্রবার রাতে একই প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, শফিক দারোয়ান পদে নয় ঝাঁড়ুদার পদে চাকরির জন্য দরখাস্ত করেছেন। আসলে প্রকৃতপক্ষে শফিক কোন পদে চাকরি করছেন এর সদুত্তর কোন ভাবেই মিলছে সাধারণ মানুষের কাছে।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নের মশুরাকান্দা গ্রামের ইব্রাহীম মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম শফিক দীর্ঘ দিন যাবৎ নিয়োগ না পেয়ে ওই কার্যালয়ের কর্মকর্তা সেজে পুরো এলাকা দাবরিয়ে বেড়াচ্ছেন। ভুমি অফিসটি এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করছেন সে। ওই কর্যালয়ে জমির খাজনা,খারিজ করা,পর্চা উঠানো থেকে সকল কিছুই তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এছাড়াও ওই কার্যালয়ে নিজের চাকরি স্থায়ীকরণ না হলেও তার শ্যালক মামুন মিয়াকেও এনে চাকরি দিয়েছেন সে। অথচ অলিপুরা সনমান্দি ইউনিয়ন ভুমি অফিসের এই দুই শ্যালা দুলাভাইকে উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কেউই তাদের সম্পর্কে অবগত নন। এদিকে ভুমি কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের বদলি জনিত কারণে বেশিদিন ওই কার্যালয়ে থাকতে না পারার সুযোগটি কাজে লাগিয়ে শফিক এককভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন।

অলিপুরা সনমান্দি ইউনিয়ন ভুমি অফিসের আশপাশে ও ওই কার্যালয়ে ভুমির খাজনা খারিজ করতে আসা সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানাগেছে,এই কার্যালয়ে যে কোন কাজ করতে হলে শফিকুল ইসলাম শফিকের সাথে কথা বলতে হয়। তার মাধ্যমেই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন ওই কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক বাসিন্দা নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজকে জানান, নিজে করেন ঝাঁড়ুদারের চাকরী তারপর তার শ্যালক মামুন মিয়াকে ওমেদার পদে চাকরি দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। কৌশলে শালা দুলাভাই মিলে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন তারা।

অভিযোগের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ থেকে জানতে চাইলে অলিপুরা ভুমি অফিসের ঝাঁড়ুদার শফিকুল ইসলাম শফিকের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

অলিপুরা ইউনিয়ন ভুমি উপ-সহকারি কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজকে জানান, সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে শফিকের নাম ঝাঁড়ুদার হিসেবে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো সেই পদে তার নিয়োগ হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনারগাঁ সহকারি কমিশনার (ভুমি) মো: ইব্রাহিম নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজকে জানান, শফিকুল ইসলাম শফিক অলিপুরা সনমান্দি ইউনিয়ন ভুমি অফিসের কেউ না। তবে কেউ যদি আমাদের কর্মকর্তা সেজে মানুষের সাথে প্রতারণা করে, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে মোটা অংকের উৎকোচ হাতিয়ে নেয়। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আগের সংবাদ দেখুননির্যাতিত মুসলমানদের পক্ষে আমরা আছি সবসময়
পরের সংবাদ দেখুনসোনারগাঁয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর বিকল্প নেই: বাবু