
নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ
বন্দর উপজেলার ধামগড় ইউনিয়নে রাতের আঁধারে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করে কোটিপতি বনে যায় আওয়ামীলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদ ও ধামগড় ইউপি’র ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার আইয়ূব। এতে আশেপাশের ফসলি জমিগুলো ধসে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সরকারি গেজেটে প্রকাশিত মাটির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাসকরণ ২০১৩ সালের ৫৯নং আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী কোন ব্যক্তি ইট প্রস্তত করার উদ্দেশ্যে কৃষি জমি হতে মাটি কাটা বা সংগ্রহ করে ইটের কাচাঁমাল হিসাবে ব্যবহার করতে পারবে না।
এদিকে ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার হওয়ায় স্থানীয় লোকজন প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ। ধামগড় ইউনিয়ন থেকে এর আগেও বহুবার মাটি না কাটার জন্য উপজেলায় মৌখিকভাবে অনুরোধ করা হলেও তার কোন প্রভাব পড়েনি সেখানে।
সরেজমিনে ওই এলাকায় দেখা যায়, ধামগড় ইউনিয়নের মনারবাড়ী, মালামত, তুলাতলী, রানিজী, বুনিয়াদি, বালিগাঁ, আমৌর বটতলা, জাঙ্গাল, হালুয়া পাড়া, কামতাল সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে সংঘবদ্ধ ভাবে জমি থেকে প্রাং ১০ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নিচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা অহিদুজ্জামান, স্থানীয় মেম্বার সহ এলাকার অসাধু ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় লোকজন প্রথম দিকে কয়েকবার বাধা দিলেও প্রভাবশালীরা নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে মাটি কাটা চালিয়ে যাচ্ছে। দিনে না কাটলেও সরকারি অফিস ছুটি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিকেল থেকে শুরু হয়ে যায় মাটি কাটার মহোৎসব। বিশেষ করে রাতের আধারেই ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করে ইটভাটায়। এসব মাটি পরিবহনে ব্যবহার করা হয় ড্রাম ট্রাক। এতে করে রাস্তাও ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে।
মনারবাড়ী রানীজী এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিক নামে এক কৃষক বলেন, এই অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষের জীবিকা চলে কৃষি কাজ করে। প্রতিটি জমিতে বছরে দুই থেকে তিনটি ফসল হয়। এখানে আমার ২টি জমি আছে ১৫ শতাংশ করে ৩০ শতাংশ। আমি মাটি বিক্রি করবোনা বললেও জোড় করে মাটি কেটে নেয় ভূমিদস্যু হাফেজ আইয়ূব মেম্বার ও আওয়ামী লীগ নেতা অহিদুজ্জামান।
ভুক্তভোগী খলিলুর রহমান বলেন, জন্মের পর থেকেই আমি আমার বাবাকে দেখি এই জমি চাষ করে আসতে। আমরাও এই জমি আবাদ করছি, এখন জোর করে মাটি কেটে নেয় তারা। মাটি নেওয়ার ফলে আমাদের এমপির দেওয়া ২ কিলোমিটার রাস্তাটির এখন বেহাল দশা। যে কোন মূর্হতে ধ্বসে পরতে পারে রাস্তাটি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ধামগড় ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড হাফেজ আইয়ূব মেম্বার বলেন, আমরা জমি কিনে মাটি নিয়ে আসি। এটাও কি অপরাধ? তাহলে আরো মানুষ যে দিনদুপুরে নেয়! আমরাতো এলাকাবাসীর সমস্যা হবে দেখে রাতে মাটি কেটে নেই।
আওয়ামীলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদ বলেন, আমরা মাটি আগে কেটেছি। এখন আর মাটি কাটি না।
ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বলেন, ফসলি জমির মাটি বিক্রি করা অন্যায়। এটা আমার জানা নেই। তবুও আমি বিষয়টি জেনে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।