নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের রসুলবাগ এলাকার নব্যত্রাস রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ এলাকায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকায় স্বঘোষিত পঞ্চায়েত কমিটি ঘোষনা করে পুরো এলাকায় সন্ত্রাসের রাজক্ত কায়েম করেছেন রিয়াজ। এলাকার স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান সাজু ডেভেলপারসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ শাহাজাহান সাজুর কাছে সত্তর লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি। দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে সন্ত্রাসী রিয়াজ ও তার বাহিনীর সদস্যরা সাজু ডেভেলপারসের ক্রয়কৃত জায়গায় দেওয়া সাইনবোর্ড ভাংচুর করে।
এলাকাবাসীরা জানায়, গত পাঁচ আগষ্ট আওয়ামীলীগের সরকার পতন হওয়ার পর বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে রসূলবাগ এলাকায় চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, জমি দখলসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছেন রিয়াজ উদ্দিন। গত তিন মাসে পুরো এলাকায় সন্ত্রাসের রামরাজক্ত কায়েম করেছেন তিনি। এলাকার উঠতি বয়সের কিশোরগ্যাংদের নিয়ে গড়ে তোলেছেন একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। এ সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। ওই এলাকার শিল্পকারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের টার্গেট করে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা হাতিয়ে নিচ্ছেন। সম্প্রতি রসূলবাগ পঞ্চায়েত কমিটি নিজেই ঘোষনা করে কমিটির সহ-সভাপতি পদটি বাগিয়ে নেন তিনি। রসূলবাগ শাপলা চত্বর এলাকায় রিয়াজ মিয়া একটি সিমেন্টের দোকান দিয়েছেন। ওই এলাকার বাড়িঘর নির্মাণ করতে হলে তার কাছ থেকে নির্মাণ সামগ্রী নেওয়ার জন্য বাধ্য করছেন তিনি। এতে ওই এলাকার নির্মানাধীণ বাড়ির মালিকরা রিয়াজ ও তার বাহিনীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে।
গত দুই বছর পূর্বে রসূলবাগ এলাকার এর নারীর সাথে অসামাজিক কার্যকলাপের সময় এলাকাবাসীরা তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। পরে তিন নাম্বার ওয়ার্ডের গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ বিচার শালীস করে তাকে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
গেল তিন বছর আগে বটতলা এলাকায় তার মালিকানাধীন আমিন সুপার মার্কেটে আরাফাত ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোরে ওই এলাকার এক নারীকে দোকানে সদাই কিনতে গেলে তাকে জড়িয়ে ধরেন রিয়াজ মিয়া। এসময় আশপাশের লোকজন দৌড়ে এসে ওই নারীকে উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে বিচার শালীসে রিয়াজ উদ্দিনকে জুতাপেটা করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এই প্রতিবেদককে জানান, রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ গেল আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে আওয়ামীলীগ নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়েছেন। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের সাথে সাথেই নিজের ভোল্ট পাল্টে ফেলেন তিনি। এখন ওই এলাকার বিএনপির বড় নেতা বলে নিজেকে দাবি করে এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম চালালেও প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করছেন না। তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা থাকলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার না করায় সে দিন দিন আরোও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের মোবাইল ফোনে কয়েকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেন নি।
সাজু ডেভেলপারসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাহান সাজু জানান, গেল পাঁচ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পরপরই রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ রসূলবাগসহ আশপাশ এলাকায় সন্ত্রাসের রাজক্ত কায়েম করেছেন। উঠতি বয়সের ছেলেদের প্রলোভন দেখিয়ে একটি বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছেন। আমার কোম্পানীর নামে আনমুন প্যাকেজিংয়ের মালিকের কাছ থেকে একটি জমি ক্রয় করি। আমি জমিতে বালু ভরাট করতে গেলে সন্ত্রাসী রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ আমার কাছ থেকে সত্তর লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে সাজু ডেভেলপারসের সাইনবোর্ড ভেঙ্গে ফেলে। এ বিষয়ে আমি আইনের আশ্রয় নিবো। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী রিয়াজ ও তার বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য সেনাবাহিনী র্যাবসহ প্রশাসনের উর্ধবতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। তিনি বলেন, তার পকেট কমিটির সদস্যদের দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের গোয়েন্দা সংস্থার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান তিনি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল মামুন জানান, রসুরবাগ এলাকায় আনমুল প্যাকিজিংয়ের বায়নাকৃত জায়গার মালিক সাজু ডেভেরপারস এর কাছে সত্তর লাখ টাকা চাঁদা চাওয়ার বিষয়ে এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাই নি। লিখিত অভিযোগ পেলে রিয়াজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা জানান, সন্ত্রাস,চাঁদাবাজ ও জমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই আমরা অভিযান পরিচালনা শুরু করেছি। রসূলবাগ এলাকার রিয়াজ উদ্দিনের বিষয়টি খতিয়ে দেখে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্য্যালয়: ৪র্থ তলা, রুপালী সুপার মার্কেট, চিটাগাংরোড, সিদ্ধিরগঞ্জ।
বার্তা কক্ষ: ইমেইলঃ [email protected] মোবাইলঃ 01711581634, 01921-116126
Powered by Sourav Bhuiyan