A Top Ads

নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজঃ গণঅভূত্থানে ছাত্র জনতার পাশে থেকে স্বৈরাচার পতনে অগ্রনী ভুমিকা পালন করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জের বাতান পাড়া এলাকার রওশন আলীর ছেলে আবুল কালাম আজাদ রাসেল। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই তিনি মাঠ পর্যায়ে ছাত্র-জনতাকে সাথে নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামে তিনি অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছেন। আন্দোলনের এক পর্যায়ে তাকে নারায়ণগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল সতের জুলাই তাকে পাগলা বাড়ি তার বাসা থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এই ছাত্র নেতার নাম আবুল কালাম আজাদ রাসেল। তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি রওশন আলীর ছেলে। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর জেল গেইটে স্থানীয় শতশত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন ও ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দরা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।


এলাকাবাসী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে জানাযায়, আবুল কালাম আজাদ রাসেল সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে এইচ এসসি ও অনার্স ডিগ্রী লাভ করেন। এবার ছাত্র জনতা আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের জন্য যখন রাস্তায় নেমে আসে সেই মুহুর্তে সরকারের পেটুয়াবাহিনীর সদস্য পুলিশ ও র‌্যাবের সদস্যরা ছাত্র জনতার উপর নির্বিচারে গুলিয়ে চালিয়ে তাদেরকে হত্যা করে আন্দোলনকে নৎসাত করার চেষ্টা চালায়।

সেই মুহুর্তে আবুল কালাম আজাদ রাসেল ঘরে বসে থাকেন নি। ছাত্র জনতার আন্দোলনকে সমর্থন দিয়ে তিনি ঢাকার শাহবাগ ও সিদ্ধিরগঞ্জের শিমড়াইল, সাইনবোর্ড, মৌচাক এলাকায় আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। তাকে আন্দোলন থেকে কোনভাবেই সরাতে না পেরে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গত সতের জুলাই বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এসময় বিস্ফোরক দ্রব্য মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। বাইশ দিন জেল খেটে দেশ নতুন করে স্বাধীনতা লাভ করার পর গত ছয় আগষ্ট তিনি মুক্তি পান। এসময় এলাকার বিএনপির নেতৃস্থানীয় নেতাকর্মী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলেনর নেতাকর্মী জেল গেইটে তাকে বিশাল সংবদ্ধনা দেন।

মিজমিজি বাতান পাড়া এলাকার বাসিন্দা মনির হোসেন জানান, আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামলে রাজণৈতিক চাপে সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা হিসেবে এলাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক কার্যক্রম করতে বাধ্য হন আবুল কালাম আজাদ। এসময় তাকে এক প্রকার জিম্মি করে সেচ্ছাসেবকলীগ নেতাদের ছবি সম্বলিত ফেষ্টুন ব্যানার ও ছবি তুলতে বাধ্য করেন। ২০২১ সালের জানুয়ারী মাসের আনুমানিক দশ তারিখ নারায়ণগঞ্জ সেচ্ছাসেবকলীগের আহ্বায়ক নিজাম উদ্দিন ও যুগ্ন আহবায়ক গোলাম কিবরিয়া খোকন স্বাক্ষরিত এক পত্রে ঘোষনা করেন আবুল কালাম আজাদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সেচ্ছাসেবকলীগের কোন কমিটিতে তার নাম নেই এবং এই কমিটির তিনি কেউ না। এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি ওলিউল্লাহ হাওলাদার জানান, বিএনপির একটি পক্ষ আবুল কালাম আজাদের সাথে সেচ্ছাসেবকলীগের নেতাদের ছবি সম্বলিত পোষ্টার, লিফলেট, ব্যানার ও ছবি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিয়ে তাকে রাজনৈতিক, সামাজিক, পারিবারিক ও ব্যাক্তিগতভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে মনে করেন তিনি। এসকল অপপ্রচার বন্ধ করার দাবি জানান তিনি।

এক নাম্বার ওয়ার্ড বিএনপির প্রচার সম্পাদক আরিফ হোসেন জানান, আবুল কালাম আজাদের বাবা রওশন আলী চেয়ারম্যান সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি ও এক নাম্বার ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন যাবৎ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আওয়ামীলীগ সরকারের রোষানলে পড়ে তার বিরোদ্ধে আঠাশটি রাজনৈতিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়িয়েছেন দীর্ঘ সময়।

এ বিষয়ে আবুল কালাম আজাদ জানান, ১৬ জুলাই বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা। এদিন আমাদের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে প্রকাশ্যে পুলিশ গুলি করে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ পাশবিক ঘটনা দেশ-বিদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। যার ফলে সরকারের ক্ষমতায় থাকার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ হাসিনাই একমাত্র সরকার প্রধান, যিনি ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। তিনি বলেন, ছাত্র জনতার উপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করার দৃশ্য দেখে বসে থাকতে পারি নি। আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য রাজপথে নেমে আসি। সরকার বিরোধী আন্দোলন অগ্রনী ভুমিকা পালন করি। মৃত্যুর কথা ভুলে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ি হায়নাদের বিরুদ্ধে।

যুদ্ধে জয়ী হওয়ার আগেই আমাকে বাসা থেকে গ্রেফতার করে জেলা হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরের দিন সরকার আন্দোলনে অংশ গ্রহনকারীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করায় আমি জেল হাজত থেকে মুক্তি পাই। যদি দেশ নতুন করে স্বাধীন না হতো তাহলে এখনও হয়তো আমাকে জেলেই পচে মরতে হতো। তিনি বলেন, আমি সেচ্ছাসেবকলীগের রাজনীতিতে কখনোই সক্রিয় ছিলাম না। আওয়ামীলীগের চাপে কয়েকটি মিটিং মিছিলে উপস্থিত ছিলাম। এটাকে পুজি করে বিএনপির কতিপয় নেতাকর্মীরা আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রাচার চালাচ্ছেন।

 

আগের সংবাদ দেখুনফ্যানের সিলিং এ ফাঁস দিয়ে নারীর আত্মহত্যা
পরের সংবাদ দেখুনসোনারগাঁওয়ে যুবদলের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত