রস বাগিচার গাছি সেলিম বলেন, আমাদের এখানে ৪৬টি খেজুর গাছ রয়েছে। আশা করছি প্রতিদিন এখান থেকে প্রায় ২৫০-৩০০ লিটার খেজুরের রস সংগ্রহ করতে পারবো। যা নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশ এলাকায় সরবরাহ করা যাবে। আমাদের এই বাগানের রসকে নিরাপদে রাখার জন্য জাল ব্যবহার করবো। হাড়ি ব্যবহার করবো। যাতে বাদুড় রস নষ্ট করতে না পারে। সর্বোপরি রসের মান পরিপূর্ণভাবে বজায় রাখার চেষ্টা করা হবে।
রস বাগিচার অ্যাডমিন মোস্তাফিজুর রহমান সাদরিল বলেন, গত বছর এখান থেকে ৩০০-৪০০ লিটার রস সংগ্রহ করা হয়েছে। এবার আমরা আশা করছি প্রতিদিন গড়ে ২০০-২৫০ লিটার রস পাবো। যদি আশানুযায়ী রস সংগ্রহ করতে পারি তাহলে লাভবান হতে পারবো। তবে লাভের থেকে বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে খেজুর রসের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টাকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এখানে শীতের আমেজটাকে পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করার জন্য খেজুর পাতা দিয়ে তাঁবু বানানো হবে। গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। কেউ যদি পিকনিক করতে চান তাহলে সেই ব্যবস্থা করা হবে।
রস বাগিচার প্রধান অ্যাডমিন জোবায়ের হোসেন নুর বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলাতেই খেজুরের গাছ দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু শহরাঞ্চল বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশ এলাকায় খেজুরের গাছ বিলুপ্তির পথে। তারপরও আমরা এখানে অনেকগুলো খেজুর গাছ পেয়েছি। যা আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো। আমরা চাচ্ছি এগুলো পরিচর্যা করে খেজুরের রস নামাতে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য বর্তমান প্রজন্মকে খেজুর গাছের প্রতি আকৃষ্ট করে তোলা। শীতের সকাল হতেই খেজুরের গাছের নিচে এসে রস সংগ্রহ করা ও পান করা বিষয়টি ভাবতেই অন্যরকম লাগে। তাই আমরা চাচ্ছি আমাদের এই রস বাগিচার মাধ্যমে খেজুরের রসের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা।এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ঐতিহ্যগতভাবে বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে খেজুর গাছ এবং এর রস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। নারায়ণগঞ্জে একসময় খেজুর গাছ লক্ষ্য করা গেলেও শিল্পায়ন ও আবাসনসহ বিভিন্ন কারণে এর সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। আমরা উৎসাহিত করছি পতিত জায়গায় ও রাস্তার পাশে খেজুর চারা রোপণে। সেই সঙ্গে যারা খেজুরের রস নিয়ে কাজ করছেন তাদেরও আমরা উৎসাহিত করছি। তাদের যে কোনো সহযোগিতায় আমরা পাশে থাকবো।