
খুলনার ভৈরব নদের তীরে নগরঘাট এলাকায় মা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে কেনা জমি ও পাটের গোডাউন দেখে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থেকে সড়ক পথে খানজাহান আলী সেতু (রূপসা সেতু) পার হয়ে আড়ংঘাটা বাইপাস ধরে দিঘলিয়া ঘাটে পৌঁছান।
ঘাট পার হয়ে প্রধানমন্ত্রী বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে দিঘলিয়ার নগরঘাট এলাকায় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে কেনা পাটের গোডাউনে পৌঁছান।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার ছোটবোন শেখ রেহানা ছাড়াও চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, শেখ সারহান নাসের তন্ময়সহ পরিবারের কয়েকজন সদস্য ছিলেন। সেখানে প্রায় ৪০ মিনিট অবস্থান করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ব্যক্তিগত সফর হওয়ায় আওয়ামী লীগের কোনো নেতার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কোনো সুযোগ ছিল না। সে কারণেই তারা সেখানে যেতে পারেননি।
তবে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান প্রধানমন্ত্রীর মায়ের জায়গাটি দেখভাল করেন; তিনি সেখানে ছিলেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সহধর্মিনী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে দিঘলিয়ার ভৈরব নদের কোলঘেঁষে নগরঘাট এলাকায় ১ একর ৪৪ শতক (৪ বিঘা) জমি কেনেন। সেখানে পাটের গোডাউন ও একটি কক্ষ ছিল। তৎকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই শেখ আবু নাসের এ জমি দেখাশোনা করতেন।
বাবা-মা নিহতের পর প্রধানমন্ত্রী এ জমির মালিক হলেও জমিটির কথা জানতেন না। ২০০৭ সালে তিনি তার ব্যক্তিগত আইনজীবীর মাধ্যমে এ জমির খোঁজ পান।
বঙ্গবন্ধুর পুরাতন সেই পাট গোডাউন ভেঙে সেখানে আধুনিক গুদামঘর নির্মাণ করা হয়েছে। নদীর তীরবর্তী স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে রেস্ট হাউজ। গোডাউন সংলগ্ন পাকা রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেলের নামে।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে কেন্দ্র করে মহাসড়কজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছিল নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। খুলনায় প্রধানমন্ত্রীর দলীয় বা সরকারি কোনো অনুষ্ঠান না থাকায় নগরঘাট এলাকায় উল্লেখযোগ্য কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
তবে প্রধানমন্ত্রী খুলনায় প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে সড়কের দুইপাশে দলীয় নেতাকর্মীসহ হাজার হাজার সমর্থক দাঁড়িয়ে তাকে স্বাগত ও অভিবাদন জানান।
আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল রানা আরও জানান, দিঘলিয়া থেকে প্রধানমন্ত্রী খুলনা নগরীর শেরেবাংলা সড়কে অবস্থিত চাচা শেখ আবু নাসেরের বাড়িতে যান। বঙ্গবন্ধু খুলনায় এসে এই বাড়িতে অবস্থান করতেন।
সেখানে খুলনার মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকসহ দলের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী মাগরিবের নামাজ আদায় শেষে সড়কপথে খুলনা ত্যাগ করেন। রাতে তিনি গোপালগঞ্জে অবস্থান করবেন।