A Top Ads

নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ

সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী পশ্চিপাড়া এলাকায় জুবায়ের ইসলাম জীবন নামে এক যুবকের সঙ্গে তার খালার বিরোধ চলছিল। সেই বিরোধ গড়ায় আদালত পর্যন্ত। এক পর্যায়ে থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা মুঠো ফোনে ঐ যুবককে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় যেতে বলেন। থানায় যাওয়ার পর ঐ যুবককে সাদা কাগজে স্বাক্ষর ও ঈদের পর বাড়ি ছেড়ে যেতে নির্দেশ দেন। ঐ যুবক সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করে তার দখলে থাকা বাড়ি ছেড়ে যেতে না চাইলে তাকে টেনে হেঁচড়ে থানা হাজতে ঢুকানোর ভয় দেখায়। একই সময় ঐ যুবকের মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা ঐ যুবকের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ারও ভয় দেখায়। ভীতসন্ত্রস্ত ঐ যুবক এ ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) পুলিশ মহাপরিদর্শকের বরাবরে লিখিত আবেদন দায়ের করেছেন।

এলাকাবাসী ও লিখিত আবেদন সূত্রে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী পশ্চিম এলাকায় খদ্দের্াঘোষপাড়া মৌজায় আর এস ১১৬৬ নম্বর দাগে গত ২০ বছর যাবত ঐ এলাকার বাসিন্দা জুবায়ের ইসলাম জীবন তার মানসিক ভারসাম্যহীন মা’সহ পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলো। উক্ত ভূমি নিয়ে আদালতে একটি মামলা (যার নং—৩৭৮/২২) হয়। উক্ত মামলার বাদী জুবায়ের ইসলাম জীবনের খালাম্মা রুবিনা আক্তার পারভীন। এতে বিবাদী করা হয় ঐ যুবক এবং তার ভাই সজল ও বোন আয়েশাকে। উক্ত মামলায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সহকারী উপ—পরিদর্শক সৈয়দ হোসেন ইতোপূর্বে সরেজমিনে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন। যাতে তিনি উল্লেখ করেন, বাদী পক্ষ (ঐ যুবকের খালাম্মা) নালিশী ভূমিতে মূল ভোগ দখলে আছেন। কিন্তু বাস্তবে ঐ যুবক ও তার প্রতিবন্ধী মা’সহ ভাই এবং বোন গত ২০ বছর যাবত ভোগ দখলে আছেন।

ঐ যুবক জানায়, উক্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালত উভয় পক্ষকে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখতে ব্যবস্থার জন্য সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। কিন্তু নিজেকে মামলার বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা দাবি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সহকারি উপ—পরিদর্শক শংকর দাস ঐ যুবককে ভূমি থেকে উচ্ছেদের জন্য ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছেন বলে জানান ঐ যুবক। এক পর্যায়ে সহকারী উপ—পরিদর্শক শংকর দাস ৫ এপ্রিল সকাল ১০টায় জুবায়ের ইসলাম জীবনকে মুঠোফোনে ফোন করে থানায় তাঁর সাথে দেখা করতে বলেন। তার ফোন পেয়ে ঐ দিন দুপুর ১২টায় জুবায়ের ইসলাম জীবন থানায় গেলে সহকারী উপ—পরিদর্শক শংকর দাস থানার দোতলার একটি কক্ষে নিয়ে একটি সাদা কাগজে তাকে স্বাক্ষর করতে বলেন। এ সময় সহকারী উপ—পরিদর্শক শংকর দাস মামলার বাদীর স্বামী (ঐ যুবকের খালু) মো. কামাল খানকে মুঠোফোনে ফোন করে বলেন— আমি জীবনকে থানায় নিয়ে এসেছি। তাকে ওসি সাহেবের রুমে নিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে নিব।

যুবক আইজিপি অফিসে দেয়া আবেদনে উল্লেখ করেন, ঘটনার আকস্মিকতায় তিনি ভয় পেয়ে সহকারী উপ—পরিদর্শক শংকর দাসকে জিজ্ঞাসা করেন এখানে কি লেখা হবে? প্রতিউত্তরে এএসআই শংকার দাস বলেন— তুই ঈদের পর ভূমির দখল ও এলাকা ছেড়ে চলে যাবি। ঘটনা বুঝতে পেরে তিনি স্বাক্ষর করতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে টেনে হেঁচড়ে হাজতে ঢুকানোর ভয় দেখায় এবং তার মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে হুমকি দিয়ে বলেন— এতদিন ভালো শংকরকে দেখসোস, এবার খারাপ শংকরকে দেখবি। তরে মামলাও দিমু, তরে সব কিছু করমু। এতে ঐ যুবক জোবায়ের জীবন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে আবেদনে উল্লেখ করেন।

গত বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) পুলিশ মহাপরিদর্শকের বরাবরে এএসআই শংকর দাসের বিরুদ্ধে লিখিত এ অভিযোগ দায়ের করেন জোবায়ের জীবন। তিনি বলেন, বর্তমানে আমি আমার মানসিক প্রতিবন্ধী মা ও আমার ভাই—বোনকে নিয়ে নীরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার বিরুদ্ধে এএসআই শংকর দাস মিথ্যা মামলা দেয়ার হুমকি দেয়ার পর থেকে আমি ভালভাবে খাওয়া—দাওয়া ও ঘুমাতে পারছি না। বাধ্য হয়ে এ ব্যাপারে আমি শংকার দাসের বিরুদ্ধে আইজিপি মহোদয়ের বরাবরে আবেদন করেছি।

এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এএসআই শংকর দাস বলেন, কত মানুষ কত কথাই বলে ভাই। আমি সাদা কাগজে সাইন নেইনি। তাকে আমি বলেছি, আপনি এ বাড়ি ছেড়ে চলে যাবেন এ কথা লিখে স্বাক্ষর করে চলে যান।

এ ব্যপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, অভিযোগকারীকে আমার কাছে পাঠিয়ে দেন। এ বিষয়টি আমি দেখছি।

আগের সংবাদ দেখুনবাংলা সনের জন্ম কথা
পরের সংবাদ দেখুনগ্র্যাজুয়েট ফাউন্ডেশন’র ইফতার ও দোয়া