নারায়ণগঞ্জ ক্রাইম নিউজ
সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী বাস ষ্ট্যান্ড জামে মসজিদের বর্তমান ইমাম মোসলেহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে সুদের কারবারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কদমতলী এলাকার সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তার বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রশাসনের প্রতি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি করছেন মুসুল্লীরা। চৌধুরীবাড়ি এলাকার মো. জয়নাল নামে এক তুলা ব্যবসায়ী সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মোসলেহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৭ সালে কদমতলী এলাকার জসিম খা নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে জয়নালকে দুই লক্ষ সত্তর হাজার টাকা সূদের বিনিময়ে প্রদান করে মোসলেহ উদ্দিন। এর বিনিময়ে প্রতি লাখে মাসে মাসে সূদ হিসেবে চার হাজার টাকা করে দেওয়া হত। পরে ২০২২ সালে জসিম খা’কে বাদ দিয়ে মোসলেহ উদ্দিন আরো ত্রিশ হাজার টাকা জয়নালকে প্রদান করে মোট তিন লক্ষ টাকা কর্জ হিসেবে মোসলেহ উদ্দিন তার স্ত্রীর নামে স্ট্যাম্পে লিখিত দলিল করেন। বিনিময়ে বারো হাজার টাকা করে সূদ নিতো মোসলেহ উদ্দিন।
অভিযোগকারী জয়নাল বলেন, তিন লাখ টাকায় প্রতি মাসে বারো হাজার টাকা করে সূদ হিসেবে মোসলেহ উদ্দিনকে আমার দেওয়ার কথা। আমার তুলার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাঝে মাঝে আমি তাকে দুই-এক হাজার টাকা কম দিতাম। পরে আমি ঠিকমত টাকা দিতে না পারায় তার সাথে সিদ্ধান্ত হয় মাসে ছয় হাজার টাকা দেওয়ার জন্য। এরপরও আমি তাকে ঠিকমত সূদের টাকা দিতে না পারায় তার সাথে আমার দ্বন্দ হয়।
কদমতলী এলাকার মানিক মেডিকেল নামে ফার্মেসীর মালিক মো. মুছা বলেন, প্রায় ৫-৭ বছর পূর্বে মোসলেহ উদ্দিনের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়েছি। এর বিনিময়ে প্রতি মাসে কখনো বাইশ’শ আবার কখনো পচিশ’শ টাকা নিতো মোসলেহ উদ্দিন। এভাবে নিলে শরীয়ত অনুযায়ী এটা সূদ হবেনা বলে তখন আমাকে সে বুঝিয়েছিল। এই টাকা কর্জ উল্লেখ করে লিখিত ষ্ট্যাম্প করা হয়েছিল। পরে তার পাওনা পরিশোধ করার সময় লিখিত ষ্ট্যাম্প ছিড়ে ফেলে দিয়েছি।
আবুল খায়ের নামে কদমতলী এলাকার আরেক বাসিন্দা জানান, চার বছর পূর্বে সে-ও মোসলেহ উদ্দিনের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা কর্জ হিসেবে নিয়েছিল। মাসে এর বিনিময়ে প্রায় তিন হাজার টাকা করে সূদ প্রদান করতে হয়েছে মোসলেহ উদ্দিনকে।
এদিকে কদমতলী এলাকার একাধিক মুসল্লি জানান, আমরা যে ইমামের পিছনে নামায আদায় করি, সে-ই যদি সূদের কারবারি হয়, তাহলে তার পিছনে দাড়িয়ে কীভাবে আমরা নামায আদায় করবো? আমরা জানতে পেরেছি সে বিভিন্ন ব্যক্তিদের টাকা ধার দেওয়ার কথা বলে এর বিনিময়ে সূদ নেয়। কর্জ উল্লেখ করে লিখিত দলিলও করে রাখেন তিনি। কিন্তু দলিলে সূদের বিষয়ে উল্লেখ থাকে না। মসজিদের একজন ইমাম-ই যদি এমন কাজ করেন, তাহলে আমরা কীভাবে তার পিছনে দাড়িয়ে নামায পড়বো? অনেক মুসল্লী ইতিমধ্যে উক্ত মসজিদে না এসে অন্য মসজিদে গিয়ে নামায আদায় করেন।
তবে অভিযুক্ত ইমাম মোসলেহ উদ্দিন তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ধার হিসেবে টাকা দিয়েছি। এর বিনিময়ে আমাকে কোন লভ্যাংশ কিংবা মুনাফা কেউ প্রদান করেনি।
এর আগে এসব অভিযোগ এবং নানাভাবে বিতর্কিত হওয়ায় মসজিদটির মুসুল্লিরা উক্ত ইমামকে পরিবর্তন করে নতুন ইমাম নিয়োগ দেওয়ার দাবিতে গণস্বাক্ষর দিয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু সকলকে নিজস্ব ফতুয়া দিয়ে মসজিদে বহাল থাকেন এই ইমাম।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্য্যালয়: ৪র্থ তলা, রুপালী সুপার মার্কেট, চিটাগাংরোড, সিদ্ধিরগঞ্জ।
বার্তা কক্ষ: ইমেইলঃ [email protected] মোবাইলঃ 01711581634, 01921-116126
Powered by Sourav Bhuiyan